মথুরার জেলা কারাগার এখন ফাঁসির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। স্বাধীন ভারতে প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসি হতে পারে উত্তরপ্রদেশের শবনম আলির (৩৮)। যে প্রেমিক সেলিমের সঙ্গে ২০০৮ সালে নিজের পরিবারের সদস্যদের খুনের ঘটনায় দণ্ডিত হয়েছে। ১৫০ বছর আগে মহিলা কয়েদিদের ফাঁসির জন্য বিশেষ ঘর তৈরি হয়েছিল মথুরার জেলে। তবে সেই ঘরের ব্যবহার কোনওদিনই করতে হয়নি। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে এসে প্রথমবার সেই ফাঁসিকাঠের প্রয়োজন পড়েছে। আমরোহার বাসিন্দা শবনমের ফাঁসির জন্য প্রস্তুত মথুরার সেই কুখ্যাত ঘর।
জেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিআইজি অখিলেশ কুমার বলেন, ‘ফাঁসির দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তবে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। শবনমের ফাঁসির দড়ি আসছে বক্সার থেকে। শবনমকে ফাঁসিকাঠে ঝোলাবেন মিরাটের ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ। গত বছর নির্ভয়াকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত অপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল এই জল্লাদের হাতেই। তাই এখানকার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে।’
জানা গিয়েছে, জেলের ওই ফাঁসিকাঠ সঠিক অবস্থায় নেই। তাই সেই কাঠ এবং নতুন দড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত রামপুর জেলা সংশোধনাগারের আছে শবনম। সংশোধনাগারের জেলার রাকেশ কুমার বর্মা জানান, ফাঁসির যাবতীয় প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী, শবনমকে মথুরা জেলে স্থানান্তরিত করার জন্য আমরোহা জেলা প্রশাসনকে আর্জি জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মথুরার ফাঁসির জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন পবন জল্লাদ।
আবার পবন জহ্লাদ ফাঁসি–ঘর পরীক্ষা করে ফাঁসি দেওয়ার লিভার ও বোর্ডে কিছু পরিবর্তন করার জন্য বলেছেন জেল কর্তৃপক্ষকে। তবে পবন জল্লাদ বলেন, ‘আমার পরিবারে সাতজন সন্তান। সেখানে আমি পাই এই কাজের জন্য সাড়ে ৭ হাজার টাকা মাসে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে এই টাকাটা বাড়ানো উচিত।’ তিনি জানান, দাদু কালু জল্লাদের কাছে হাতেখড়ি আমার। তিহাড় জেলে প্রশিক্ষণও নিয়েছিলাম। বংশ পরম্পরায় আমরা ফাঁসুড়ে। দাদু কালু ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারী সতবন্ত সিং, কুখ্যাত রঙ্গা বিরলাদের ফাঁসি দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, কিন্তু পবনই প্রথম একসঙ্গে চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন। আর এবারও পবন প্রথম যিনি স্বাধীন ভারতে কোনও মহিলা অপরাধীকে ফাঁসি দেবেন।