মৃত্যুপ্রাপ্ত আত্মাদের জন্য পিতৃপক্ষের সময়কাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিতৃপক্ষের সময় পূর্বপুরুষদের সন্তুষ্ট করার জন্য তর্পণ, শ্রাদ্ধ ও পিন্ডদান করা হয়। এর ফলে পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ভারতে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যেখানে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ ও পিন্ডদান করার বিশেষ গুরুত্ব ও পৌরাণিক ইতিহাস রয়েছে।
গয়া- বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে ফল্গু নদীর তীরে অবস্থিত গয়া। মনে করা হয়, এখানে পিন্ডদান করলে স্বর্গপ্রাপ্তি হয়। রামও এখানেই রাজা দশরথের পিন্ডদান করেছিলেন। গয়ায় পিতৃপুরুষদের শ্রাদ্ধ-তর্পণ করে পিতৃঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ গয়ায় বিষ্ণু পিতৃদেবতা রূপে বিরাজ করেন।
প্রয়াগরাজ- সমস্ত তীর্থের মধ্যে প্রয়াগ মুখ্য স্থান মনে করা হয়। এখানে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গম হয়। এখানে পিতৃপক্ষের সময় শ্রাদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম।
বদ্রীনাথ- ভারতের চারধামের মধ্যে অন্যতম হল বদ্রীনাথ। এখানে বিষ্ণু বিরাজমান। বদ্রীনাথের ব্রহ্মমাকপাল ক্ষেত্রে তীর্থযাত্রী নিজের পিতৃপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনার জন্য পিন্ডদান করেন। মনে করা হয়, এখানেই পাণ্ডবরা নিজের বাবার পিণ্ডদান করেছিলেন।
সিদ্ধনাথ (মধ্যপ্রদেশ)- উজ্জৈনে শিপ্রা নদীর তীরে এই স্থানটি রয়েছে। এই স্থানে একটি বটবৃক্ষ রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, পার্বতীই নিজের হাতে এই বট গাছ লাগিয়ে ছিলেন।
কাশী- প্রচলিত আছে, কাশীতে মৃত্যু লাভ করলে মোক্ষ প্রাপ্তি সম্ভব। এটি শিবের নগর। কাশীতে পিশাচমোচন কুন্ডে শ্রাদ্ধের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অকাল মৃত্যু হলে এখানে পিন্ডদান করলে মোক্ষ লাভ সম্ভব বলে মনে করা হয়।
পিন্ডারক (গুজরাত)- গুজরাতের দ্বারিকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে এই স্থানটি অবস্থিত। এখানে এটি নদী রয়েছে, যেখানে শ্রাদ্ধকর্মের পর নদীতে পিন্ড দিতে হয় ও নিজের পিতৃপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধকর্ম করা হয়।