ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের একাদশী তিথিতে অজা একাদশী পালিত হয়। আজ, ৩ সেপ্টেম্বর অজা একাদশী পালিত হবে। অজা একাদশীর উপবাস রাখলে জীবনের সমস্ত সঙ্কট দূর হয় এবং মনোস্কামনা পূর্ণ হয়। শুধু তাই নয় অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল লাভ করা যায় এই একাদশীর উপবাস করলে। অজা একাদশীর দিনে বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর পুজো করলে, আর্থিক ও শারীরিক কষ্ট দূর হয়।
মাহাত্ম্য
কৃষ্ণ জানান যে, অজা একাদশীর উপবাস রাখলে সমস্ত পাপ ও কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মৃত্যুর পর ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করে। হাজার বছরের তপস্যার ফলে যে পুণ্য পাওয়া যায়, ততই পুণ্য লাভ করা যায় এই একাদশী ব্রত করলে। এদিন নারায়ণ কবচ ও বিষ্ণু সহস্ত্রনামের পাঠ করা উচিত। পাশাপাশি দানও করা উচিত।
অজা একাদশীর শুভক্ষণ
একাদশী তিথি ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা ২১ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। তবে উদয়া তিথির কারণে ৩ সেপ্টেম্বর অজা একাদশী পালিত হবে।
একাদশী ব্রত পারণ মুহূর্ত
৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা ০১ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত।
অজা একাদশী ব্রত কথা
সত্যযুগে দেবতারা রাজা হরিশচন্দ্রের পরীক্ষা নিলে, তিনি স্বপ্নে নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সমস্ত রাজ্য ঋষি বিশ্বামিত্রকে দান করে দেন। পরের দিন রাজার কাছ থেকে ৫০০ স্বর্ণমুদ্রা রাজার কাছ থেকে দান হিসেবে চান বিশ্বামিত্র। তখন রাজা বলেন যে, ‘আপনি নিজের ইচ্ছ মতো নিতে পারেন।’ এর পর বিশ্বামিত্র বলেন যে, ‘আপনি আগেই সমস্ত কিছু দান করে দিয়েছেন, তা হলে দান করা জিনিস ফের কী ভাবে দানে দিতে পারেন।’ তখন নিজের স্ত্রী ও পুত্রকে বন্ধক রেখে এক দাস রূপে এক চাণ্ডালের কাছে চাকরি শুরু করেন। কষ্ট সত্ত্বেও সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত হননি বিষ্ণু ভক্ত হরিশ্চন্দ্র।
এক ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে রাজার সম্পূর্ণ পরিবার কিছু খায়নি। এমনিতেও তাঁরা হরি নাম জপ করতে থাকতেন। সে দিনও হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে শ্মশানের দরজায় পাহারা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি দেখেন যে, রাজার স্ত্রী তাঁর সন্তান রোহিতাশ্বের মৃতদেহ নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আসছেন। এর পর সন্তানকে দাহ করার জন্য স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা চান রাজা। তিনি যে ডোমের কাছে কাজ করতেন, তাঁর আদেশ ছিল যে দাহ সংস্কারের জন্য আসবে, তাঁর কাছ থেকে শুল্ক নেওয়া হবে। রানির কাছে কিছু না-থাকায় সে আঁচলের ছিঁড়ে তাঁর টুকরো দেন। রাজার কর্তব্যপরায়ণতা দেখে ঈশ্বর প্রসন্ন হন এবং তাঁর পুত্রকে জীবিত করে দেন। সমস্ত রাজ্য ফিরে পান রাজা। এ ভাবে অজা একাদশী ব্রতর প্রভাবে হরিশ্চন্দ্রের সমস্ত দুঃখ দূর হয়ে যায়।