জগন্নাথ দেব, জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি, ওড়িশার পুরীতে ভগবান শ্রী জগন্নাথের পবিত্র মন্দির রয়েছে। পুরীকে বলা হয় পৃথিবীর বৈকুণ্ঠ। এই মন্দিরের অনেক বৈশিষ্ট্য এটিকে বিস্ময়কর করে তোলে।
পুরীতে আয়োজিত রথযাত্রায় লক্ষাধিক ভক্ত অংশগ্রহণ করেন। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে শুরু হয় রথযাত্রা উৎসব। এদিন থেকে শুরু হয় তিনটি রথ নির্মাণের কাজ। এই রথগুলি তৈরি করতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। দুই শতাধিক কাঠমিস্ত্রি মিলে এই তিনটি রথ তৈরি করেন।
পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরকে অনেক উপায়ে চমৎকার বলে মনে করা হয়। মন্দিরে ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার কাঠের মূর্তি রয়েছে। মন্দিরের শীর্ষে থাকা চক্রটি সুদর্শন চক্রের প্রতীক। এই মন্দিরের রান্নাঘর ভারতের সবচেয়ে বড় রান্নাঘর হিসেবে পরিচিত। ভগবানের জন্য মহাপ্রসাদ প্রস্তুত করার জন্য এই বিশাল রান্নাঘরে পাঁচ শতাধিক পাচক এবং তাদের ৩০০ জন সহযোগী কাজ করেন। প্রতিদিন ভগবানকে ৬৪ প্রকার ভোগ নিবেদন করা হয়। মন্দিরের রান্নাঘরে প্রসাদ রান্নার জন্য সাতটি পাত্র একে অপরের উপরে রাখা হয়। এই প্রসাদ মাটির হাঁড়িতে কাঠের উপর রান্না করা হয়। উপরে রাখা পাত্রের থালা প্রথমে রান্না করা হয়, তারপর নিচ থেকে একের পর এক প্রসাদ রান্না করা হয়। কথিত আছে এই মন্দিরের উপর দিয়ে কোন পাখি উড়ে না। পুরী শহরের যেকোনো কোণ থেকে শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের পতাকা দেখা যায়। মন্দিরের পতাকা সবসময় বাতাসের বিপরীত দিকে উড়ে। প্রতিদিন মন্দিরের পতাকা বদলানোর রেওয়াজ। এই মন্দিরের চূড়ার ছায়া সবসময়ই অদৃশ্য। মাটিতে কেউ তা দেখতে পাবে না। মন্দিরের অভ্যন্তরে সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ কেউ শুনতে পায় না, যখন সমুদ্র কাছাকাছি থাকে। শ্রী জগন্নাথ মন্দির চত্বরে অনেক ছোট ছোট মন্দির রয়েছে। তাদের সংখ্যা ১০৮।