চলতি বছর কার্তিক মাসে এবার নক্ষত্রের রাজা পুষ্য নক্ষত্রের মহাসংযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ধনতেরাসের আগে এটি কেনাকাটার আর একটি অত্যন্ত শুভ সময়। জ্যোতিষীদের মতে, ৬৭৭ বছর পর কেনাকাটার মহাসংযোগ ও মহামুহূর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। এই নক্ষত্রে কী কিনতে পারেন ও কী কী করতে পারেন জেনে নিন।
৬৭৭ বছর পর দেখা যাবে এমন যোগ
জ্যোতিষীদের মতে, বর্তমানে শনি ও বৃহস্পতির মকর রাশিতে বিরাজমান থাকাকালীন বৃহস্পতি পুষ্য নক্ষত্রের সংযোগ এর আগে ১৩৪৪ সালের ৫ নভেম্বর দেখা গিয়েছিল। এবার ৬৭৭ বছর পর ফের এমন সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় মকর রাশিতে শনি ও বৃহস্পতির যুতি থাকবে এবং বৃহস্পতিবার পুষ্য নক্ষত্র হবে।
পু্ষ্য নক্ষত্রের গুরুত্ব
চন্দ্রের রাশির চতুর্থ, অষ্টম ও দ্বাদশ স্থানে উপস্থিত হওয়াকে অশুভ মনে করা হয়। কিন্তু এই পুষ্য নক্ষত্রের কারণে অশুভ সময়ও শুভ সময়ে পরিবর্তিত হয়ে যায়। গ্রহের বিপরীত দশা সত্ত্বেও এই যোগ অত্যন্ত শক্তিশালী, কিন্তু একটি অভিশাপের কারণে এই যোগে বিবাহ করা উচিত নয়। তবে এর প্রভাবে এসে সমস্ত কুপ্রভাব দূর হয়। মনে করা হয়, এ সময় যে কেনাকাটা করা হয় তা অক্ষয় থাকে। এই শুভ দিনে মহালক্ষ্মীর সাধনা করলে, অশ্বত্থ বা শমি গাছের পুজো করলে বিশেষ ফল লাভ করা যায় ও মনোস্কামনা পূর্ণ হয়।
বৃহস্পতি পুষ্য নক্ষত্রের সময়কাল
২৮ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বৃহস্পতি পুষ্য নক্ষত্রের শুভক্ষণ শুরু হচ্ছে সকাল ৯টা ৪১ মিনিট থেকে। শেষ হবে ২৯ অক্টোবর, শুক্রবার সকাল ১১টা ৩৮ মিনিটে। এর মধ্যে কেনাকাচার সবচেয়ে বেশি শুভক্ষণ থাকবে ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা ৩৩ মিনিট থেকে সকাল ৯টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত। ২৮ অক্টোবর শনি ও বৃহস্পতির যুতি থাকবে, যার ফলে পুষ্য নক্ষত্রের শুভ প্রভাব বৃদ্ধি পাবে।
এদিন কোন কোন বিশেষ যোগ সৃষ্টি হচ্ছে
এদিন সর্বার্থসিদ্ধি যোগ, অমৃত সিদ্ধি যোগ এবং রবি যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সর্বার্থসিদ্ধি ও অমৃত সিদ্ধি যোগ পুরো দিন থাকবে। আবার রবিযোগ থাকবে সকাল ৬টা ০৩ মিনিট থেকে ৯টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত।
অভিজীত মুহূর্ত- সকাল ১১টা ৪২ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত।
বিজয় মুহূর্ত- দুপুর ১টা ৩৪ মিনিট থেকে ২টো ১৯ মিনিট পর্যন্ত।
অমৃতকাল মুহূর্ত- সকাল ৭টা ০২ মিনিট থেকে ৮টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।
গোধূলি মুহূর্ত- সন্ধ্যা ৫টা ০৯ থেকে ৫টা ৩৩ মিনিট পর্যন্ত।
সায়হ্ন সন্ধ্যা মুহূর্ত- সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিট থেকে ৬টা ৩৬ মিনিট পর্যন্ত।
নিশিতা মুহূর্ত- বেলা ১১টা ১৬ মিনিট খেরে পরের দিন দুপুর ১২টা ০৭ মিনিট পর্যন্ত।
বৃহস্পতি পুষ্য নক্ষত্রে কী কেনাকাটা করা যায়
১. এই নক্ষত্রের অধিপতি শনি, যিনি চিরস্থায়িত্ব প্রদান করেন ও যার কারক লোহা। আবার এই নক্ষত্রের দেবতা বৃহস্পতি, যার কারক সোনা। পুষ্য নক্ষত্রে বৃহস্পতি, শনি ও চন্দ্রের প্রভাব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সোনা, রুপো, লোহা (গাড়ি ইত্যাদি)-র বস্তু কেনা যায়।
২. মনে করা হয় এদিন সোনা কিনলে তা শুভ ও স্থায়ী হয়। এর পাশাপাশি এ দিন গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, দোকান, কাপড়, অলঙ্কার, শৃঙ্গারের বস্তু, স্টেশনারি, মেশিনারি ইত্যাদি কেনাও শুভ।
৩. এই নক্ষত্রে শিল্প, চিত্রকলা ও পড়াশোনা শুরু করাকে উত্তম মনে করা হয়। এ সময় মন্দির নির্মাণ, গৃহ নির্মাণের কাজও শুভ মনে করা হয়।
৪. বৃহস্পতি পুষ্য বা শনি পুষ্য যোগের সময় ছোট বাচ্চাদের উপনয়ন সংস্কার, তার পর প্রথমবার বিদ্যাভ্যাস প্রারম্ভের জন্য গুরুকুলে পাঠানো হয়।
৫. এদিন হালখাতা পুজো করা ও হিসেব লেখার কাজও শুরু করতে পারেন। দোকান খোলা, ব্যবসা শুরুর মতো নতুন কাজের সূচনা করতে পারেন এ দিন থেকে।
৬. এদিন দীর্ঘ মেয়াদি অর্থ লগ্নি করলে ভবিষ্যতে তাঁর সুফল পাওয়া যাবে।