গৌতম বুদ্ধ নেপালের কপিলবাস্তুতে শাক্য ক্ষত্রিয় বংশে ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মনে করা হয়, এই বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনেই তাঁর জন্ম।
গৌতম বুদ্ধের পিতার নাম ছিল শুদ্ধোধন। তিনি হিমালয়ের কাছে অবস্থিত কোশল রাজ্যের রাজা ছিলেন এবং তিনি শাক্য বংশের প্রধানও ছিলেন। গৌতম বুদ্ধের মায়ের নাম মহামায়া।
কথিত আছে, মায়াদেবী যখন দেবদহে যাচ্ছিলেন সেই পথে লুম্বিনীর জঙ্গলে বুদ্ধের জন্ম হয়। নেপালের কপিলবাস্তু ও দেবদাহের মধ্যবর্তী নোতনবা থেকে ৮ মাইল দূরে রুকমিন্দেই নামক স্থান আছে। যেখানে লুম্বিনী নামে একটি বন ছিল। এখানেই তাঁর জন্ম হয়েছিল।
শৈশবকালে গৌতম বুদ্ধের নাম ছিল সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থের জন্মের পর ঋষিদের ডাকা হয়েছিল তাঁর নামকরণের জন্য। বুদ্ধের জন্মকুণ্ডলী দেখে ঋষিরা বলেছিলেন, তাঁর ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল। তিনি সমগ্র সৃষ্টিকে জ্ঞান দিয়ে আলোকিত করবেন।
গৌতম বুদ্ধ তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা গুরু বিশ্বামিত্রের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তিনি বেদ ও উপনিষদের শিক্ষা পান। বেদ ও উপনিষদের পাশাপাশি তিনি যুদ্ধ ও রাজ্য পালনের শিক্ষাও নিয়েছিলেন।
১৬ বছর বয়সে রাজকুমারী যশোধরার সঙ্গে সিদ্ধার্থের বিয়ে হয়। তাঁরা একটি প্রাসাদে থাকতে শুরু করেন এবং একটি পুত্র লাভ করেন যার নাম রাখেন রাহুল।
জাগতিক মোহ সিদ্ধার্থকে সংসারে আবদ্ধ করে রাখতে পারেনি। তিনি বৈরাগী হয়ে যান এবং পরিবার ত্যাগ করে তিনি জ্ঞানের সন্ধানে যাত্রা শুরু করেন। এই ঘটনা মহাভিনিষ্ক্রমণ নামে পরিচিত।
গৃহত্যাগের পর, তিনি তাঁর প্রথম আধ্যাত্মিক গুরু আলার কলামের কাছ থেকে সন্ন্যাস বিদ্যার শিক্ষা লাভ করেন। এর পরে তিনি তপস্যা শুরু করেন।
৬ বছর কঠোর সাধনা করেছিলেন। তবুও তিনি জ্ঞান অর্জন করতে পারেননি। এ সময় তার শরীর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। তিনি মধ্যম পথ খুঁজতে লাগেন। একদিন সুজাতা নামের এক গ্রাম্য মেয়ের কাছ থেকে পায়েস খেয়ে উপোস ভাঙেন। তার পরে তিনি একটা বড় অশ্বত্থ গাছের নিচে বসে ধ্যান শুরু করলেন। সপ্তম দিনে তিনি পরম জ্ঞান লাভ করেন। এই ঘটনা নির্বান নামে পরিচিত। এরপর তিনি সিদ্ধার্থ বুদ্ধ নামে পরিচিত হন।
গৌতম বুদ্ধ ৪৮৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে মারা যান। বুদ্ধের দেহত্যাগের এই ঘটনাটি ‘মহাপরিনির্বাণ’ নামে পরিচিত।