বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) পালিত হবে পৌষ মাসের শুক্পক্ষের একাদশী। এই একাদশী পুত্রদা একাদশী নামে পরিচিত। একে আবার বৈকুণ্ঠ একাদশীও বলা হয়। একাদশী তিথি বিষ্ণুকে সমর্পিত। এদিন উপবাস রেখে বিষ্ণুর পুজো ও ব্রতকথা শোনার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। মনে করা নিয়ম মেনে এই একাদশী ব্রত পালন করলে যোগ্য সন্তান লাভের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এমনকি সন্তান সমস্ত সঙ্কট থেকে মুক্তি পায়।
পুত্রদা একাদশীর শুভক্ষণ
একাদশী তিথি শুরু- ১২ জানুয়ারি বিকেল ৪টে ৪৯ মিনিট থেকে।
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ৩২ মিনিট।
ব্রত ভঙ্গের সময়- ১৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ৭টা ১৫ মিনিট থেকে ৯টা ২১ মিনিট পর্যন্ত।
পুত্রতা একাদশী ব্রতকথা
মহাভারতে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে পুত্রদা একাদশীর ব্রতকথা শুনিয়ে ছিলেন।
একদা ভদ্রাবতী রাজ্যে রাজা সুকেতুমানের রাজত্ব ছিল। শৈব্যা নামক রাজকন্যার সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। তাঁর রাজ্যে সমস্ত ধরনের সুখ, সৌভাগ্য ও বৈভবের বাস ছিল। তবে বিবাহের বহু বছর অতিক্রম হওয়া সত্ত্বেও রাজা সুকেতুমান নিঃসন্তান থেকে যান। এ কারণে স্বামী-স্ত্রী দুঃখী থাকতেন।
নিঃসন্তান হওয়ায় মৃত্যুর পর তাঁর পিণ্ডদান কে করবেন, এই দুশ্চিন্তায় রাজাকে বিরক্ত করে ওঠেন। এই সব ভেবে ব্যথিত মন নিয়ে রাজা নিজেকেই শেষ করে ফেলার কথা চিন্তা করতে শুরু করেন। তবে শেষপর্যন্ত তিনি এই পদক্ষেপ করেননি। অন্যদিকে, রাজকার্যে তাঁর মন বসে না। এরপরই একদিনের বনের উদ্দেশে রওনা দেন রাজা।
এক পুকুরের ধারে পৌঁছান তিনি। সেখানে হতাশ মনে বসে থাকেন। তখন কিছু দূরে একটি আশ্রম দেখতে পান রাজা সুকেতুমান। ওই আশ্রমে গিয়ে সমস্ত ঋষিকে প্রণাম করেন। ঋষিদের নিজের দুঃখের কারণ জানান রাজা। তারপরই সন্তান লাভের জন্য পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী ব্রত পালন ও পুজো করার পরামর্শ দেন ঋষিগণ। পুত্রদা একাদশীর মহিমা বর্ণনা করেন ঋষিগণ।
নিজের সমস্যার সমাধান পেয়ে আনন্দে রাজ্যে ফিরে আসেন রাজা। পুত্রদা একাদশী ব্রত এলে রাজা ও তাঁর স্ত্রী ব্রত পালন করেন এবং নিয়ম মেনে বিষ্ণুর পুজো করেন। এর ফলে রানি গর্ভবতী হন। সময় অতিক্রম হলে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন রানি শৈব্যা। পুত্রদা একাদশী ব্রতের পুণ্য প্রভাবে রাজা পুত্র লাভ করেন। নিঃসন্তান দম্পতিরা এই একাদশীর উপবাস রাখলে ও পুজো করলে সন্তান লাভের কামনা পূর্ণ হবে।