হিন্দু ধর্মে একাদশীর বিশেষ গুরুত্ব স্বীকার করা হয়। প্রতিমাসে দুটি একাদশী থাকে, একটি কৃষ্ণ পক্ষ ও অপরটি শুক্লপক্ষের একাদশী। এ ভাবে বছরে মোট ২৪টি একাদশী থাকে। একাদশী বিষ্ণুকে সমর্পিত। এদিন নিয়ম-নীতি মেনে বিষ্ণুর পুজো করা হয়। ১৮ অগস্ট পুত্রদা একাদশী। একে পবিত্রা একাদশীও বলা হয়।
পুত্রদা একাদশীর শুভক্ষণ
একাদশী তিথি শুরু- ১৮ অগস্ট, ভোর ৩টে ২০ মিনিটে।
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ১৯ অগস্ট, ভোর রাত ১টা ০৫ মিনিটে।
পারণের সময়- ১৯ অগস্ট সকাল ৬টা ৩২ মিনিট থেকে ৮টা ২৯ মিনিট।
একাদশী ব্রতর মাহাত্ম্য
সন্তানের মঙ্গলকামনায় এই পুত্রদা একাদশী ব্রত পালিত হয়। এই ব্রতর প্রভাবে নিঃসন্তান দম্পতি সন্তান লাভ করতে পারেন। আবার একাদশী ব্রতর প্রভাবে পাপ মুক্ত হওয়া যায় এবং ব্যক্তির সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণ হয়।
পুত্রদা একাদশী ব্রত কথা
দ্বাপর যুগে মহিষ্মতীপুরীর রাজা মহীজিত ছিলেন শান্তি প্রিয় ও ধর্ম প্রিয়। তবে পুত্রহীন ছিলেন তিনি। মহামুনি লোমেশকে এ বিষয় জানান রাজার শুভাকাঙ্খীরা। তখন মহামুনি বলেন যে, পূর্বজন্মে রাজা একজন অত্যাচারী, ধনহীন বৈশ্য ছিলেন। এই একাদশীর দিনেই তিনি তৃষ্ণার্ত অবস্থায় জলাশয়ের কাছে পৌঁছান। সেখানেও আগে থেকেই তৃষ্ণার্ত গোরু জল পান করছিল। রাজা সেই গোরুকে থামিয়ে নিজে জল পান করতে শুরু করে দেন। রাজার এমন কাজ ধর্মের অনুরূপ ছিল না।
নিজের পূর্বজন্মের পুণ্য কর্মের ফলে তিনি রাজা হন, কিন্তু সেই একটি পাপের কারণে নিঃসন্তান থেকে যান। মহামুনি পরামর্শ দেন যে, রাজার সমস্ত শুভাকাঙ্খীরা যদি শ্রাবণ শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে নিয়ম মেনে উপবাস করে তার পুণ্য রাজাকে দেন, তা হলে রাজা সন্তান লাভ করতে পারেন।
এর পর মহামুনির নির্দেশ মতো, প্রজার পাশাপাশি রাজাও এই ব্রত করেন। কয়েক মাস পর এক তেজস্বী পুত্রের জন্ম দেন রানি। তাই এই একাদশীকে শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী বলা হয়।