ধনতেরাস শুধুই সম্পদের উৎসব নয়। এটি সুখ ও সমৃদ্ধির এক বৃহৎ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। ধনতেরাসের সকলের জীবনে সম্পদের পাশাপাশি আনন্দ ও ঐশ্বর্য নিয়ে আসে। ধনতেরাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি। কথিত আছে, সেই কাহিনির অব্যবহিত পর থেকেই মহাধুমধামসহকারে প্রতি বছর হিন্দুরা ধনতেরাস উৎসব পালন করে থাকে।
ধনতেরাসের তিথি ও শুভক্ষণ
ধনতেরাস এই বছর ১৮ অক্টোবর অর্থাৎ শনিবার পড়েছে। ধনতেরাসের তিথি শুরু হবে ১৮ অক্টোবর দুপুর ১২ টা বেজে ১৮ মিনিটে। তিথি শেষ হবে ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা বেজে ৫১ মিনিটে। হিন্দু পঞ্জিকায় সকালের তিথিই তারিখ নির্ধারণের কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যাকে উদয়তিথি বলা হয়।
ধনতেরাসের উৎপত্তির নেপথ্যে
ধনতেরাসের উৎপত্তির নেপথ্যে যে কাহিনি রয়েছে, তা হল রাজা বলির কাহিনি। বিষ্ণুর এক অবতারও এই কাহিনির সঙ্গে জড়িত। তখন রাজা বলির পৃথিবীতে প্রবল প্রতিপত্তি। যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি দখল করে বসেছেন এই বিশাল বিস্তৃত সাম্রাজ্য। তাঁর এই রাজ্যজয় ও সম্পত্তির নেশা ভীত করেছিল সমস্ত দেবতাগণকে। সবাই গিয়ে তখন শরণাপন্ন হন ভগবান বিষ্ণুর। ভগবান বিষ্ণু তখন অবতীর্ণ হন বামন রূপে। রাজা বলির যজ্ঞে বামন হয়ে তিনি গেলে রাজা তাঁকে কিছু দানের ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন - প্লাস্টিক বোতল বা জারে গঙ্গাজল রাখা কি শুভ? কোন ধরনের পাত্র সবচেয়ে পবিত্র
আরও পড়ুন - সূর্যের নক্ষত্রে শুক্রের গোচর! ৫ রাশির জীবনে সুখের বন্যা, প্রেমেও ধামাকা
শুক্রাচার্য বুঝেছিলেন তাঁর স্বরূপ
রাজা বলির সেই যজ্ঞে উপস্থিত ছিলেন শুক্রাচার্য স্বয়ং। তিনি বামনের স্বরূপ চিনতে পারেন। সতর্ক করেন রাজা বলিকে। কিন্তু মদগর্বিত রাজা পিছপা হননি। তিনি বামনকে ইচ্ছাপ্রকাশ করতে বলেন। সেই সময় বামনরূপী বিষ্ণু তাঁর তিনটি পদক্ষেপের সমান জমি কামনা করেন। রাজা ভাবেন, এ আর এমন কী। কিন্তু বামনের প্রথম পদক্ষেপে গোটা পৃথিবী আচ্ছন্ন হয়। দ্বিতীয় পদক্ষেপে গোটা স্বর্গ। এর পর তৃতীয় পদক্ষেপ কোথাও রাখার স্থান হচ্ছিল না। সেই সময় বামনই প্রশ্ন করেন রাজাকে, বলুন কোথায় রাখব। রাজা তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। তিনি মাথা নত করে বলেন, আমার মস্তকে রাখুন প্রভু। এরপর তৃতীয় পদক্ষেপ তাঁর মস্তকে রাখেন বিষ্ণু। কথিত আছে, রাজা বলির কাছ থেকে যা যা পুনরুদ্ধার করেছিলেন বিষ্ণু, সেসবই বহুগুণ বাড়িয়ে ফেরত করেন দেবতাগণকে। সেখান থেকেই পালন করা হয় ধনতেরাসের এই উৎসব।