কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের এই একাদশী দেবোত্তন একাদশী এবং হরি প্রবোধনী একাদশী নামেও পরিচিত। এই দিনে ভগবান বিষ্ণু চার মাসের যোগ নিদ্রা ত্যাগ করেন এবং এর সাথে শুভ কাজও শুরু হয়। তুলসী শ্রী হরির প্রিয়, তাই জাগরণের পর প্রথমে তুলসীর সঙ্গে তার বিবাহের আয়োজন করা হয়। তাই এই দিনে উপবাস ও পূজা-অর্চনা ছাড়াও কিছু ধর্মীয় ব্যবস্থা নিলে শ্রী লক্ষ্মী-নারায়ণের আশীর্বাদ আপনার উপর থাকে, আপনার মনোবাসনা পূরণ হয়, জীবন থেকে ঝামেলা দূর হয়।
আর্থিক সমৃদ্ধির জন্য
কার্তিক মাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, উদ্ভিদে তুলসী, মাসে কার্তিক, দিনে একাদশী এবং তীর্থস্থানে দ্বারকা আমার হৃদয়ে বাস করে। তাই কার্তিকে তুলসীর পূজা করা এবং বিশেষ করে দেবোত্থানী একাদশীর দিনে তুলসী পূজা করলে ভগবান বিষ্ণুর সাথে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন। আপনি যদি পুরো মাস ধরে তুলসীর সেবা না করে থাকেন তাহলে একাদশী থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত ঘির প্রদীপ জ্বালিয়ে মা তুলসীকে প্রসন্ন করুন। এতে করে আর্থিক সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পুণ্য অর্জনের জন্য
পুরাণে শালিগ্রামকে ব্রহ্মাণ্ডভূত শ্রী নারায়ণের প্রতীক মনে করা হয়েছে। পদ্মপুরাণ অনুসারে, যে ব্যক্তি শালিগ্রামকে দেখে, মাথা নত করে, তাকে স্নান করিয়ে পূজা করে, সে বহু ত্যাগের পুণ্য এবং গো-দানের ফল লাভ করে। তাঁকে স্মরণ, কীর্তন, ধ্যান, উপাসনা ও প্রণাম করলে বহু পাপ দূর হয়। যে স্থানে শালিগ্রাম ও তুলসী আছে, ভগবান শ্রী হরি সেখানে বাস করেন এবং ভগবতী লক্ষ্মীও সেখানে বাস করেন।পদ্মপুরাণ অনুসারে যেখানে ভগবান কেশব শালিগ্রাম শিলা রূপে উপবিষ্ট, সেখানে সকল দেবতা, অসুর, যক্ষ রয়েছেন। যিনি শালিগ্রাম শিলার জলে অভিষেক করেন, তিনি সমস্ত তীর্থস্থানে স্নান এবং সমস্ত যজ্ঞ সম্পাদনের সমান ফল লাভ করেন।
কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য
বারবার চেষ্টা করেও আপনার কোন কাজ হচ্ছে না, তাহলে এই দিনে অশ্ব্থ্থ গাছটিকে ছুঁয়ে নমস্কার করুন এবং এর মাটি কপালে লাগান এবং আপনার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করুন, এতে সাফল্য আসবে কাজে।
সুখী দম্পতির জন্য
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি খুব বেশি মতবিরোধ হয় বা কোনো ধরনের বিভেদ দেখা দেয় তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই দিনে মা লক্ষ্মী ও ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করার সময় তুলসীর কাণ্ড মলি বা হলুদ সুতোয় মুড়ে সাতবার প্রদক্ষীণ করুন। তার পরে ঘি এর প্রদীপ জ্বালিয়ে সুখী দাম্পত্যের জন্য মা তুলসীর কাছে প্রার্থনা করুন।
শান্তির জন্য
দেবোত্থানী একাদশীর দিনে খাদ্য ও অর্থ ছাড়াও মানুষ মৌসুমী ফল, ধান, ভুট্টা, গম, বাজরা, গুড়, উড়দ(মাসকলাইয়ের ডাল) এবং বস্ত্র দান করতে হবে, এর সাথে যদি এই দিনে জলের পাত্র, মিষ্টি আলু এবং আখ দান করা হয় তাহলে এটি অত্যন্ত উত্তম বলে বিবেচিত হয় এবং এর দ্বারা গৃহে শান্তি ও সুখ থাকে, গ্রহ দোষ নিরাময় হয়।