ইদে মিলা-উন-নবি। কেউ কেউ লেখেন ইদে মিলাদুন্নবি। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, এটি কোন ইদ? সাধারণত বছরে দু’টি ইদই শুনি আমরা। তাহলে এটি কোন ইদ? এর উত্তর জানার আগে, জেনে নেওয়া যাক, ইদের মানে কী?
ইদ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল খুশি হওয়া, ফিরে আসা, আনন্দ উদযাপন করা ইত্যাদি। তাই এই ধরনের উৎসবকে ইদ বলা হয়। এবার প্রশ্ন হল, কেন ইদে মিলাদ-উন-নবি? এই দিনটিতে মহান নবির আগমন হয়েছিল। এটি হজরত মহম্মদের জন্মদিন। ‘ইদে মিলাদ-উন-নবি’ সেই নবিজির আগমনের খুশি উদযাপন করাকে বোঝায়।
অশান্তি আর সংঘাতময় আরবের বুকে আঁধারের বুক চিড়ে মহানবি শান্তি নিয়ে এসে সত্যের, সভ্যতার ও ন্যায়ের পথ নির্দেশন করেছিলেন বলে মনে করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নবিজি তার মধ্যে দিয়ে গোটা বিশ্বকে শান্তিতে পরিপূর্ণ করে তোলেন। নবিজির পবিত্র শুভাগমনের দিনে খুশি উৎযাপন করাটাই হচ্ছে ‘ইদে মিলাদুন্নবি’ উদযাপনের উদ্দেশ্যে।
এখন এই দিনটি পালন করা নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন আছে। অনেকেই এই দিনটি পালন করেন না। কেন? এই উৎসবটি শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ পালন করেন। সুন্নি মুসলমানরা রবিউল-আউয়াল মাসের ১২ তারিখে এটি পালন করেন। শিয়া মুসলমানরা ১৭ রবিউল-আউয়ালে পালন করে। ইদ মিলাদ-উন-নবি আবার একই সঙ্গে নবির মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবেও বিশ্বাস করা হয়। তাই কিছু মুসলমান এই দিনটিকে শোকপ্রকাশের দিন হিসাবেও দেখেন। একদিকে যেমন বিভিন্ন দেশে ইদ মিলাদ-উন-নবি ব্যাপকভাবে পালন করা হয়, তেমনই আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে বিশ্বাস করেন, এই দিনটির ইসলামী সংস্কৃতিতে কোনও স্থান নেই। সালাফি এবং ওয়াহাবি মুসলমানরা এটিকে পালন করেন না। কারণ তাঁরা মনে করেন, নবি নিজে এই দিনটি পালন করতেন না। তাহলে এটি পালন করার সঙ্গত কারণ নেই।
যদিও এর বিরুদ্ধ যুক্তিও আছে। অনেকে মনে করেন, নবিজী নিজেই নিজের মিলাদের দিনকে পালন করতেন। মুসলিম শরিফের একটি হাদিস দিয়ে তা প্রমাণ করারও চেষ্টা করেন অনেকে। সেখানে বলা হয়, হযরত আবু কাতাদা হতে বর্নিত রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামার দরবারে আরজ করা হল তিনি প্রতি সোমবার রোজা রাখেন কেন? উত্তরে নবিজি ইরশাদ করেন, এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। এই দিনেই তিনি প্রেরিত হয়েছেন এবং এই দিনেই তাঁর উপর পবিত্র কোরান নাজিল হয়েছে। সেই কারণেই এই দিনটি পালন করা হয়।