বাঙ্গালীদের বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই আছে। ১৩ই এপ্রিল এ বছর চৈত্র সংক্রান্তি। গ্রাম বাংলার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় উৎসব হল গাজনের উৎসব। প্রধানত শিব মনসা এদের কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে গাজনের উৎসব। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ এবং আষাঢ় মাসে গাজনের উৎসব পালিত হয়।
তবে চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে যে গাজনের উৎসব হয় সেটা ভগবান শিবকে কেন্দ্র করে হয়। এই গাজনের উৎসব পালিত হয় চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ ধরে এবং এই উৎসব শেষ হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়কের পুজোর পর।
বিভিন্ন জায়গায় এই গাজনের উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন মালদাতে এই গাজনের উৎসবকে বলা হয়ে থাকে গম্ভীরা, অন্যদিকে জলপাইগুড়িতে এই উৎসব গমীরা নামে পরিচিত।
চৈত্র মাস ছাড়া যখন অন্য সময় এই গাজনের উৎসব পালিত হয় বিশেষ করে যদি সেটা শিবের গাজন হয় তাহলে তার একটা অন্য নাম আছে। সেই গাজনের উৎসবকে বলা হয়ে থাকে হুজুগে গাজন। গাজন উৎসব বিভিন্ন জায়গায় মোটামুটি তিন দিন ধরে পালিত হয়ে থাকে এবং গাজনের উৎসবের সঙ্গে নানা রকম মেলাও বসে।
গাজনের উৎসব মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত ঘাট সন্ন্যাস, নীলব্রত ও চড়ক। দীর্ঘদিন উপবাস করে শিবের পুজোর ফুল সংগ্রহ করে প্রতীকী শিবলিঙ্গ কে মাথায় করে ঢাকঢোল কাঁসর বাজিয়ে পরিক্রমায় বের হয় ভক্ত সন্ন্যাসীরা। গাজনের সময় ভক্তরা নানা উপায় শরীরে যন্ত্রণা দিয়ে দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য শোভাযাত্রা করে মন্দিরের উদ্দেশ্যে বের হয়। গাজনের উৎসব বিভিন্ন জায়গায় পালিত হয় যেমন মালদহ জলপাইগুড়ি নদীয়া বর্ধমান বাঁকুড়া পুরুলিয়া বীরভূম প্রভৃতি জাগায় এই উৎসব হতে দেখা যায়।
মুখোশ নৃত্য সং সাজা শিব গৌরীর বেশ ধারণ করা দৈত্য দানব সেজে নৃত্য করা এছাড়াও লৌকিক ছড়া ও আবৃত গানের মধ্যে দিয়ে এই গাজনের উৎসব চলতে থাকে। পৌরাণিক নানা চরিত্রের মাধ্যমে তাদের বেশ ধরে শরীরের নানা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে এই উৎসব পালন করা হয়।