মাঘ মাসে যে নবরাত্রি আসে তাকে গুপ্ত নবরাত্রি বলা হয়। এটি শক্তি সাধনার উৎসব, যাতে দশ মহাবিদ্যার পুজো করা হয়। ২২ জানুয়ারি থেকে গুপ্ত নবরাত্রি শুরু হচ্ছে।
নবরাত্রির সময়টিকে মা দুর্গার পুজোর জন্য সবচেয়ে শুভ বলে মনে করা হয়। নবরাত্রি সারা বছরে মোট চারবার পালিত হয়। দুটি গুপ্ত নবরাত্রি এবং দুটি সাধারণ নবরাত্রি রয়েছে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে মাঘ, চৈত্র, আষাঢ় ও আশ্বিন মাসে নবরাত্রি হয়। সমস্ত নবরাত্রি তিন মাসের ব্যবধানে পড়ে। মাঘ মাসের গুপ্ত নবরাত্রি হল ২০২৩ সালের প্রথম নবরাত্রি।
সমস্ত নবরাত্রি প্রতিপদ অর্থাৎ মাসের একম তিথি থেকে শুরু হয় নবমী তিথি পর্যন্ত। এই বছর মাঘ গুপ্ত নবরাত্রি ২২ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে যা ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার শেষ হবে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে গুপ্ত নবরাত্রির সময় পুজো করলে ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয় এবং তারা দুঃখ থেকে মুক্তি পায়।
প্রতিপদ তিথি শুরু হয় - ২২ জানুয়ারি, রাত ০২.২২ থেকে
প্রতিপদ শেষ হয় - ২২ জানুয়ারি, রাত ১০.২৭ পর্যন্ত
ঘট স্থাপনের জন্য অভিজিৎ মুহূর্ত - ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২.১১ থেকে ১২.৫৪ পর্যন্ত
স্বাভাবিক নবরাত্রি হয় চৈত্র ও আশ্বিন মাসে হয়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মীয় পুজোর পরিবেশ বিরাজ করে এবং উৎসবের মতো পালিত হয় এই দুই নব রাত্রি। শেষ দিনে কন্যা পূজন, তারপর দশমীতে সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে, গুপ্ত নবরাত্রিতে সাধনার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
সাধারণ নবরাত্রিতে দেবীর নয়টি ভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। কিন্তু গুপ্ত নবরাত্রিতে উপাসকরা দশ মহাবিদ্যার পুজো করেন।
গুপ্ত নবরাত্রি তান্ত্রিক আচার, শক্তি সাধনা এবং মহাকাল ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এতে সাধককেও কঠোর নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং উপবাসের সঙ্গে সঙ্গে সাধনা করতে হবে।
গুপ্ত নবরাত্রি সম্পর্কে এমন একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, এই সময়ে ভগবান বিষ্ণু নিদ্রাকালীন অবস্থায় থাকেন এবং এই অবস্থায় দৈবশক্তি দুর্বল হতে থাকে। এ সময় পৃথিবীতে অপ শক্তির প্রভাব বাড়তে থাকে। এই দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য গুপ্ত নবরাত্রিতে দশ মহাবিদ্যার পুজো করা হয়।
চৈত্র ও আশ্বিন মাসে নবরাত্রিতে যেখানে মা দুর্গা শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী নয়টি রূপের পুজো করেন, সেখানে গুপ্ত নবরাত্রিতে দশ মহাবিদ্যা কালী, তারা, ষোড়শী, ভুবনেশ্বরী, ছিন্নমস্তা, ভৈরবী, ধূমাবতী, বগালামুখী, মাতঙ্গী এবং কমলা মাযের এই দশ রূপের পুজো করা হয়।