হিন্দু ধর্মে, ভগবান শিবকে উৎসর্গ করা শ্রাবণ মাস যা ১৮ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে। শ্রাবণ মাসের সোমবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। সেই সঙ্গে শ্রাবণ মাসের মঙ্গলবারেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনটি মা পার্বতীকে উৎসর্গ করা হয়। এই দিনে মহিলারা মঙ্গলা গৌরীর উপবাস করেন।
এদিন মঙ্গলা গৌরী ব্রত পালন করা হবে: মঙ্গলা গৌরী ব্রত শুরু হবে ২৩ জুলাই থেকে। এদিন প্রথম মঙ্গলা গৌরী উপবাস পালিত হবে।
এরপর ৩০ জুলাই দ্বিতীয় মঙ্গলা গৌরী ব্রত, ৬ আগস্ট দ্বিতীয় এবং ১৩ আগস্ট চতুর্থ ও শেষ মঙ্গলা গৌরী ব্রত পালন করা হবে।
এই সব দিন মা পার্বতীর বিশেষ পুজো হবে। বিবাহিত মহিলারা অখণ্ড সৌভাগ্য কামনা করতে এবং অবিবাহিত মেয়েরা ভালো স্বামী কামনা করতে এই উপবাস পালন করে।
মঙ্গলা গৌরীর কথা : কিংবদন্তি অনুসারে, প্রাচীনকালে ধর্মপাল নামে এক বণিক ছিলেন, যার অর্থের অভাব ছিল না। তিনি নিজে সকল গুণে ধন্য ছিলেন। তিনি ছিলেন দেবাদিদেব মহাদেবের ভক্ত। পরে শেঠ ধরমপাল একজন মেধাবী কনেকে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর পরও তাদের কোনও সন্তান হয়নি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী।
তিনি ভাবতে লাগলেন যদি তার কোন সন্তান না থাকে তাহলে তার ব্যবসার উত্তরাধিকারী কে হবে? একদিন শেঠ ধরমপালের স্ত্রী তাকে সন্তানের বিষয়ে একজন মহান পণ্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। স্ত্রীর পরামর্শে ব্যবসায়ী শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত পণ্ডিতের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। সেই সময় সেই পণ্ডিত ব্যবসায়ী দম্পতিকে শিব ও মা পার্বতীর পুজো করার পরামর্শ দেন।
দেবী পার্বতী আশীর্বাদ করেছিলেন: পরে ব্যবসায়ীর স্ত্রী রীতি অনুযায়ী ভগবান শিব ও মা পার্বতীর পুজো করেন। ধর্মপালের স্ত্রীর ভক্তিতে খুশি হয়ে একদিন দেবী পার্বতী আবির্ভূত হয়ে বললেন- আমি তোমার ভক্তিতে প্রসন্ন, তুমি যাহা চাও তাই চাও। তোমার ইচ্ছা অবশ্যই পূরণ হবে। সে সময় ধর্মপালের স্ত্রী সন্তান চেয়েছিলেন। দেবী পার্বতী তাকে পুত্র লাভের আশীর্বাদ করেছিলেন। কিন্তু সেই শিশু ক্ষণজন্মা ছিল।
এক বছর পর ধর্মপালের স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পুত্রের নামকরণ হলে ধর্মপাল জ্যোতিষীকে তাঁর পুত্রের ক্ষণজন্মা হওয়ার কথা বলেন। তখন জ্যোতিষী ধর্মপালকে পরামর্শ দেন যে মঙ্গলা গৌরী উপবাস পালনকারী একটি মেয়ের সঙ্গে তার ছেলের বিয়ে দিতে। জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী শেঠ ধরমপাল তার ছেলেকে মঙ্গলা গৌরী উপবাস পালনকারী একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন। মেয়ের পুণ্যের কারণে ধর্মপালের ছেলে মৃত্যুর কবল থেকে মুক্তি পায়। এই ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এই ব্রত।