প্রতি মাসে দুটি পক্ষ হয়, কৃষ্ণ পক্ষ ও শুক্ল পক্ষ। দুই পক্ষের একাদশ দিনে একাদশী তিথি পালিত হয়। বছরে মোট ২৪টি একাদশী তিথি পড়ে। সনাতন ধর্মে একাদশীকে সমস্ত ব্রতর মধ্যে শ্রেষ্ঠ মনে করা হয়। এই দিনটি বিষ্ণুকে সমর্পিত। বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী বরুথিনী একাদশী হিসেবে পরিচিত। চলতি বছর ৭ মে বরুথিনী একাদশী। এদিন উপবাস রাখলে এবং নিয়ম নীতি মেনে পুজো করলে সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর হয় এবং জীবনে শান্তি লাভ করা যায়।
একাদশীর শুভক্ষণ
একাদশী তিথি শুরু- ৬ মে, দুপুর ২টো ১০ মিনিটে।
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ৭ মে, সন্ধে ৩টে ৩২ মিনিট পর্যন্ত।
দ্বাদশী তিথি সমাপ্ত- ৮ মে সন্ধে ৫টা ৩৫ মিনিট।
একাদশী ব্রতভঙ্গের সময়- ৮ মে সকাল ৫টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু করে সকাল ৮টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত।
ব্রতভঙ্গের মোট সময়- ২ ঘণ্টা ৪১ মিনিট
বরুথিনী একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য
এই একাদশীতে বিষ্ণুর বামন অবতারের পুজো করার বিধান রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, কন্যাদান ও সারা বছরের তপের ফলে যে পুণ্য লাভ করা যায়, সেই সমস্ত পুণ্য একটি বরুথিনী একাদশী উপবাস করার ফলে পাওয়া যেতে পারে। এই একাদশী দারিদ্র্য নাশ করে এবং কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। এদিন ব্রত করার ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের আগমন ঘটে। মানুষের পাপের অন্ত হয় এবং ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করে।
এই একাদশীর দিনে কিছু উপায় করলে দুঃখ, দারিদ্র দূর করা যায়।
দুর্ভাগ্য দূর করার উপায়
একাদশী তিথিতে সকালে স্নান করে হলুদ রঙের বস্ত্র পরে বিষ্ণুর পুজো করা উচিত। এর পর দক্ষিণবর্তী শঙ্খে জল ভরে বিষ্ণুর অভিষেক করা উচিত। মনে করা হয়, এর ফলে বিষ্ণু প্রসন্ন হন এবং দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করে দেন। তবে যে শঙ্খ বাজানো হয়, তা দিয়ে জল অর্পণ করবেন না। অভিষেকের জন্য পৃথক শঙ্খ ব্যবহার করুন।
দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের জন্য
তুলসী বিষ্ণুর অতি প্রিয়। তাই একাদশীর দিনে বিষ্ণুকে অবশ্যই তুলসী অর্পণ করা উচিত। অশ্বত্থ গাছে জল অর্পণ করুন এবং ছোলা ডাল, গুড়, মুনক্কা দান করুন। অসহায় ও দরিদ্র ব্যক্তিকে ভোজন করাতে ভুলবেন না। এর পর দুঃখ দূর করার জন্য প্রার্থনা করুন।
পরিবারে বৃদ্ধির জন্য
প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পরিবারে সমৃদ্ধি না-এলে এবং অর্থাভাব লেগে থাকলে একাদশী তিথিতে হলুদ সরষের দানা নিজের বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিন। এর পর দ্বাদশী তিথির দিনে সেই সমস্ত সরষের দানা আগুনে ছেড়ে দিন। এর ফলে ঘরে ব্যাপ্ত নেতিবাচক শক্তি ও নজর দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পরিবারে আর্থিক উন্নতিও হবে।
মানসিক শান্তির জন্য
কাজে মনোনিবেশ করতে না-পারলে এবং মন অশান্ত থাকলে একাদশী তিথিতে বিষ্ণুর পুজো করার পর তুলসী মালা ধারণ করুন। এর ফলে মানসিক শান্তি লাভ করতে পারবেন। তবে তুলসী মালা ধারণ করার পর তামসিক ভোজন এড়িয়ে চলুন।