হিন্দু ধর্মে একাদশী ব্রতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিকে কামদা একাদশী বলা হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বছরে মোট ২৪টি একাদশী থাকে। প্রতি মাসের শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষে একাদশী ব্রত পালিত হয়।
হিন্দু নববর্ষের প্রথম মাসের একাদশীকে কামদা একাদশী বলা হয়। কামদা একাদশীর দিনে নিয়ম মেনে বিষ্ণুর পুজো করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী এই ব্রত পালন করলে হাজার বছরের তপস্যার ফল পাওয়া যায়। কামদা একাদশীর শুভ ক্ষণ জেনে নিন এখানে।
কামদা একাদশী শুভক্ষণ
চলতি বছর ১২ এপ্রিল (আজ) কামদা একাদশী। ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার ভোর ৪টে ৩০ মিনিট থেকে একাদশী তিথি শুরু হয়েছে। ১৩ এপ্রিল (বুধবার) ভোর ৫টা ২ মিনিটে এই তিথি সমাপ্ত হবে।
কামদা একাদশীর দিনে সর্বার্থসিদ্ধি যোগ নির্মিত হচ্ছে। ১২ এপ্রিল ভোর ৫টা ৫৯ মিনিট থেকে শুরু করে ১৩ এপ্রিল সকাল ৮টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত এই যোগ থাকবে। ১৩ এপ্রিল দুপুর ১টা ৩৯ মিনিট থেকে বিকেল ৪টে ১২ মিনিট পর্যন্ত এই একাদশীর পারণের সময়।
কামদা একাদশী ব্রতকথা
বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী প্রাচীনকালে ভোগীপুর নামক নগর ছিল। সেখানে পুণ্ডরীক নামক রাজার রাজত্ব ছিল। এই নগরে একাধিক অপ্সরা, কিন্নর, গন্ধর্ব বসবাস করতেন। এঁদের মধ্যে ললিতা ও ললিতের মধ্যে পারস্পরিক অত্যন্ত স্নেহ ছিল। একদা গন্ধর্ব ললিত দরবারে গান গাইছিলেন। হঠাৎই স্ত্রী ললিতার কথা মনে পড়ে যায় তাঁর। ললিতের সুর, লয় ও তাল কেটে যেতে শুরু করে। কর্কট নামক নাগ তাঁর এই ভুলটি ধরে ফেলে এবং রাজাকে জানিয়ে দেয়। রাজা রেগে গিয়ে ললিতকে রাক্ষস হওয়ার অভিশাপ দিয়ে বসেন।
এ কথা ললিতা জানতে পারলে তাঁর অত্যন্ত কষ্ট হয়। শৃঙ্গী ঋষির আশ্রমে গিয়ে সে প্রার্থনা করতে শুরু করে। শৃঙ্গী ঋণি বলেন, হে গন্ধর্ব কন্যা! এবার চৈত্র শুক্ল একাদশী আসছে, একে কামদা একাদশী বলা হয়। কামদা একাদশীর ব্রত পালন করে নিজের স্বামীকে তার পুণ্যের ফল দিলে সে রাক্ষস যোনি থেকে মুক্তি পাবে। মুনির আজ্ঞার পালন করে ললিতা। একাদশী ব্রতর ফল ললিতকে প্রদান করার সঙ্গে সঙ্গে সে রাক্ষস যোনি থেকে মুক্ত হয়ে পুরনো স্বরূপ লাভ করে।