জ্যোতিষবিদ্যায় বিদুষী হিসাবে পরিচিত খনার বচন বহুকাল ধরে বঙ্গ জীবনের লোককথার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ‘খনার বচন’ নামে প্রচলিত বহু বক্তব্যের নানান অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে। আঠপৌরে বাংলায় লেখা এই বার্তাগুলি সেজেছে ছন্দের তালে তালে। দেখে নেওয়া যাক, খনার ৭ বচন, যা আজও বাঙালি নানান আলোচনার মাঝে আওড়ে থাকে। একই সঙ্গে দেখে নেওয়া যাক, এই ৭ বচনের নেপথ্যে থাকা বার্তার অর্থ।
খনার বচন:-
১)'যদি বর্ষে মাঘের শেষ,/ধন্য রাজার পুণ্য দেশ'- এই বার্তার অর্থ মাঘের শেষে যদি বর্ষণ হয়, তাহলে রাজা ও দেশের কল্যাণ হয়।
২) 'জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ,/তিন না জানেন বরাহ'-এই উক্তিটি বোঝায় যে জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে মানুষের হাতে নয়, বরং তা পূর্বনির্ধারিত এবং কেউ তা জানতে বা আটকাতে পারে না।
৩) কলা রুয়ে না কেটো পাত,/তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত- এই বার্তার অর্থ হল, কলার ফলন শেষে অর্থাৎ কলা কেটে নামানোর পর কলাগাছের গোড়া যেন উপড়ে ফেলা না হয়। কলাগাছের গোড়া থাকলে, সারা বছরই কলা ফলবে।
৪) সরিষা বনে কলাই মুগ, বুনে বেড়াও চাপড়ে বুক- এই বার্তার অর্থ হচ্ছে, একই জমিতে যদি সর্ষে ও মুগ বা সর্ষে ও কলাই একসাথে বোনা যায় বা চাষ করা যায়, তাহলে দুটি ফসলই একসাথে পাওয়া যায়।
৫) আউশের ভুঁঁই বেলে, পাটের ভুঁই আঁটালে- এই বার্তা দিয়ে বলতে চাওয়া হয়েছে, বেলেমাটি যুক্ত জমিতে আউশ ধান আর এঁটেল মাটিযুক্ত জমিতে পাট চাষ ভালো হয়।
৬) উনো বর্ষায় দুনো শীত- এই বার্তাতে বলতে চাওয়া হয়েছে,' যে বছর বৃষ্টি কম হয়, সে বছর শীত বেশি পড়ে।'
৭) বৈশাখের প্রথম জলে/আশুধান দ্বিগুণ ফলে, খনায় বলে শুন ভাই/তুলায় তুলা অধিক পাই - এই বার্তার অর্থ হল, প্রথমে বৈশাখে যদি বৃষ্টি ভাল হয়, তাহলে আউশ ধান ভালো হবে। খনা বলে, কার্তিকে বৃষ্টি হলে তুলা চাষ অধিক হবে।
(তথ্য সূত্র- উইকি অভিধান, উইকিপিডিয়া)