প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী অনন্ত চতুর্দশী হিসেবে পালিত হয়। এই দিনে গণেশ উত্সব শেষ হয় এবং বাড়িতে স্থাপিত গণপতিকে আড়ম্বর সহকারে বিসর্জন দেওয়া হয়। গণপতি বিসর্জনের কারণে অনেকেই এই দিনটিকে গণপতির পূজার দিন বলে মনে করেন। কিন্তু বাস্তবে এই পবিত্র উৎসব শ্রী হরির পূজার। এবার অনন্ত চতুর্দশী পড়ছে ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার।
এই দিনে নারায়ণের অসীম রূপের পূজা করা হয়। এই দিনে নিয়ম করে নারায়ণের আরাধনা করলে এবং এই উপবাস করলে সকল প্রকার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনের ব্রত নবায়নযোগ্য পুণ্য অর্জনের দিকে নিয়ে যায় অর্থাৎ যে পুণ্যের শেষ নেই। দ্বাপরযুগে, পাণ্ডবরা যখন পাশা খেলায় সর্বস্ব হারিয়ে বনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাদেরকে অনন্ত চতুর্দশীতে উপবাস করার উপদেশ দিয়েছিলেন। এর পরেই তাঁদের উপর থেকে কষ্টের মেঘ মুছে যেতে শুরু করে এবং কৌরবদের রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে তাঁরা সমস্ত অধিকার ফিরে পান। জেনে নিন এই দিনে পূজার শুভ সময় ও উপবাস পদ্ধতি।
শুভ সময়
অনন্ত চতুর্দশী তিথি ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৯.০২ থেকে শুরু হবে, যা ০৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ০৬.০৭ পর্যন্ত থাকবে। পূজার শুভ সময় সকাল ০৬.১০ থেকে সন্ধ্যা ০৬.০৭ পর্যন্ত।
উপবাস পদ্ধতি
ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ব্রতের সংকল্প করুন। এর পরে পূজার স্থানটিকে পরিষ্কার করে গঙ্গাজল ছিটিয়ে পবিত্র করুন। সেখানে ফুল রাখুন। তারপর শেষনাগের উপর শুয়ে থাকা ভগবান বিষ্ণুর ছবি রাখুন সেখানে। ছবির সামনে ১৪ টি গিঁট সংযুক্ত একটি অসীম সুতো রাখুন। এর পর ওম অনন্তায় নমঃ মন্ত্র দিয়ে ভগবান বিষ্ণু ও অনন্ত সূত্রের পূজা করুন। ভগবান ও অনন্ত সূত্রকে সিঁদুর, চাল, ফুল, ধূপ-দীপ নিবেদন করুন এবং ভগবানকে ক্ষীর বা অন্য কোন মিষ্টি নিবেদন করুন। এর পরে, অনন্ত সূত্রকে বাহুতে বেঁধে রাখুন। সারাদিন উপবাস রাখুন। সন্ধ্যায় পুজো করার পরে উপবাস ভঙ্গ করুন।
(উপরোক্ত তথ্য ধর্মীয় আস্থা ও লৌকিক মান্যতার উপর আধারিত)