শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক গুরুদের উদ্দেশে সমর্পিত দিন হল গুরু পূর্ণিমা। চলতি বছর ২৪ জুলাই গুরু পূর্ণিমা। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিই গুরু পূর্ণিমা হিসেবে পালিত হয়। এদিন ছাত্র-ছাত্রীারা নিজের গুরু বা শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। হিন্দু ধর্মে গুরুকে ঈশ্বর ও অভিভাবকের চেয়েও উঁচু আসনে বসানো হয়েছে। একজন গুরুই পারেন সুশিক্ষা প্রদান করে প্রত্যেককে উৎকৃষ্ট মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। আবার গুরুই ঈশ্বর লাভের পথ দেখিয়ে থাকেন। তাই গুরু পূর্ণিমার দিনটি সকল শিক্ষকদের নিবেদিত।
উল্লেখ্য আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদব্যাস। তিনি মহর্ষি বেদব্যাস নামে প্রসিদ্ধ। যমুনার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে তাঁর নাম হয় দ্বৈপায়ন। আবার গায়ের রং শ্যাম বর্ণের হওয়ায় তার নাম হয় কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন। বেদকে চার ভাগে বিভক্ত করার শ্রেয়ও তাঁরই। এ কারণে তাঁর নাম হয় বেদব্যাস। এ ভাবে কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন, বেদব্যাস নামে খ্যাতি লাভ করেন। হিন্দু ধর্মের সমস্ত ১৮টি পুরাণের রচয়িতা তিনি। মহাভারত গ্রন্থের রচনা করে অমরত্ব লাভ করেছেন বেদব্যাস। তাঁর জন্মদিবসই গুরু পূর্ণিমা হিসেবে পালিত হয়।
গুরু পূর্ণিমার তাৎপর্য
গুরু পূর্ণিমা শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীর সম্পর্ককে চিহ্নিত করে। আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে শিক্ষক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি শিক্ষকরা মূল্যবোধ, নৈতিকতার শিক্ষাও দিয়ে থাকে। বহির্জগতের সঙ্গে কী ভাবে পা মিলিয়ে চলতে হবে, সে বিষয়েও শিক্ষা দিয়ে থাকেন একজন শিক্ষক।
এই বিশেষ দিনে ভারতের নানান স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরু পূর্ণিমা পালন করে থাকে।
তিথি
চলতি বছর ২৪ জুলাই গুরু পূর্ণিমা। ২৩ জুলাই কাল ১০টা ৪৩ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে এবং শেষ হবে ২৪ জুলাই সকাল ৮টা ০৬ মিনিটে।
গুরু পূর্ণিমার দিনে গুরুর পুজোও করা হয়ে থাকে। গুরুর আশীর্বাদ লাভের জন্য নিজের লগ্ন অনুযায়ী এই মন্ত্রগুলি জপ করে তাঁর পুজো করুন—
মেষ লগ্ন- ওম বরিষ্ঠায় নমঃ।
বৃষ লগ্ন- ওম গুণাকরায় নমঃ।
মিথুন লগ্ন- ওম অব্যয়ায় নমঃ।
কর্কট লগ্ন- ওম জেত্রে নমঃ।
সিংহ লগ্ন- ওম অভিষ্টায় নমঃ।
কন্যা লগ্ন- ওম ধনুর্ধরায় নমঃ।
তুলা লগ্ন- ওম গিরীশায় নমঃ।
বৃশ্চিক লগ্ন- ওম অন্নতায় নমঃ।
ধনু লগ্ন- ওম শ্রীমতে নমঃ।
মকর লগ্ন- ওম বাশিনে নমঃ।
কুম্ভ লগ্ন- ওম গোচরায় নমঃ।
মীন লগ্ন- ওম গীষ্পতয়ে নমঃ।