পিতৃপক্ষের সময়ের একাদশীকে ইন্দিরা একাদশী বলা হয়। চলতি বছর আজ, ২ অক্টোবর ইন্দিরা একাদশী। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী নিয়ম মেনে এই একাদশী ব্রত পালন করলে পূর্বপুরুষরা শান্তি ও মোক্ষ লাভ করে। কোনও পাপ কর্মের কারণে পূর্বপুরুষরা নরক যন্ত্রণা ভোগ করে থাকলে এই ব্রতর প্রভাবে তাঁরা মোক্ষ লাভ করেন।
ইন্দিরা একাদশী শুভক্ষণ
একাদশীর তারিখ- ২ অক্টোবর ২০২১
একাদশী তিথি শুরু- ১ অক্টোবর রাত ১১টা ০৩ মিনিট।
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ২ অক্টোবর রাত ১১টা ১০ মিনিট।
ব্রত পারণ- ৩ অক্টোবর আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে সূর্যোদয়ের পর একাদশীর উপবাসের পারণ করা হবে।
শাস্ত্র মতে বিষ্ণুকে সমর্পিত একাদশী ব্রত পালন করলে পূর্বপুরুষরা এর সুফল লাভ করেন। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীকে ইন্দিরা একাদশী বলা হয়। এটি আবার শ্রাদ্ধ একাদশী নামেও পরিচিত।
একাদশী ব্রতকথা
পুরাণ অনুযায়ী সৎযুগে মহিষ্মতি নামক এক নগর ছিল। এখানে ইন্দ্রসেন নামক এক কুশল ও প্রতাপশালী রাজার রাজত্ব ছিল। প্রজাকে নিজের সন্তানসম মনে করতে রাজা ইন্দ্রসেন। সুখ-শান্তিতে পরিপূর্ণ ছিল মহিষ্মতি। বিষ্ণুর উপাসক রাজা ইন্দ্রসেনের সভায় একদিন হঠাৎই নারদমুনির আগমন ঘটে। রাজার কাছে তাঁর বাবার বার্তা নিয়ে আসেন নারদ। রাজার বাবা নিজের পুত্রকে বার্তা দেন যে, গত জন্মের কোনও ভুলের কারণে তিনি যমলোকেই রয়েছেন। যমলোক থেকে মুক্ত করার জন্য ইন্দ্রসেনকে ইন্দিরা একাদশীর উপবাস রাখতে বলেন তিনি। এর ফলেই মোক্ষ লাভ সম্ভব।
বাবার বার্তা শোনার পর নারদকে ইন্দিরা একাদশীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করার অনুরোধ করেন রাজা ইন্দ্রসেন। তখন নারদ জানান, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিকেই ইন্দিরা একাদশী বলা হয়। একাদশীর আগে দশমীর দিনে পূর্বরুষদের শ্রাদ্ধ করার পর একাদশী ব্রতর সংকল্প গ্রহণ করা উচিত। দ্বাদশীর তাঁরা বাবা মোক্ষ লাভ করবেন। নারদমুনির কথা অনুযায়ী ইন্দিরা একাদশীর উপবাস রাখেন রাজা ইন্দ্রসেন। দিনে স্নানের পর বিষ্ণুর পুজো করুন। বিধি মেনে পারণ ও দান করার পর ব্রত পূর্ণ হয়। নারদমুনির কথা মতো একাদশী ব্রত পালন করেন রাজা ইন্দ্রসেন। এই ব্রতর পুণ্য প্রভাবে তাঁর বাবা মোক্ষ লাভ করেন। এমনকি ইন্দিরা একাদশীর পুণ্য প্রভাবে মৃত্যুর পর রাজা ইন্দ্রসেনও বৈকুণ্ঠ গমন করেন।