কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো মূলত ধনদেবী মা লক্ষ্মীর আরাধনা করার রাত। এই পুজো আসে শরৎকালের পূর্ণিমা তিথিতে, যাকে কোজাগরী পূর্ণিমা বা শারদ পূর্ণিমা বলা হয়। এই রাতকে কেন্দ্র করে লোকবিশ্বাস ও শাস্ত্রমতে কিছু বিশেষ কাজ করার রীতি প্রচলিত আছে। লক্ষ্মীদেবীকে সন্তুষ্ট করে ঘরে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি আনার জন্যই ভক্তরা নিষ্ঠার সঙ্গে এই কাজগুলি করে থাকেন।
১. রাত জেগে মায়ের আরাধনা: 'কোজাগরী' কথাটির অর্থ হলো 'কে জেগে আছো?'। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতে মা লক্ষ্মী পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করেন এবং জিজ্ঞাসা করেন— "কে জেগে আছো?"। যে ভক্ত এই রাতে জেগে থেকে মায়ের নাম জপ, মন্ত্র পাঠ বা আরাধনা করেন, মা তাঁকে কৃপা করেন। তাই অনেকেই রাতভর জেগে লক্ষ্মী পাঁচালী পড়েন ও পূজা করেন।
২. আলো ও আলপনার সজ্জা: এই রাতে আপনার ঘরকে আলোকিত করে তুলতে হবে। দেবী যাতে আপনার গৃহে প্রবেশ করতে পারেন, সেই জন্য ঘরের দরজা থেকে পূজার স্থান পর্যন্ত চালের গুঁড়ো বা অন্য শুভ্র উপকরণ দিয়ে লক্ষ্মীর পায়ের ছাপের আলপনা আঁকা হয়। এ ছাড়াও বাড়ির প্রতিটি কোণে, দরজায় ও ছাদে প্রদীপ জ্বালানো হয়। এই আলোর সজ্জা সমৃদ্ধি ও শুভ শক্তির প্রতীক।
আরও পড়ুন - মা লক্ষ্মীর বড় প্রিয় এই ৫ রাশি! কোজাগরী পূর্ণিমায় তাদের প্রাপ্তির লিস্টে কী কী?
আরও পড়ুন - লক্ষ্মী পুজোর সপ্তাহেই দেখা দিচ্ছে কালসর্প যোগ! কোন কোন রাশির কপাল খুলছে?
৩. ভোগ নিবেদন ও প্রসাদ গ্রহণ: লক্ষ্মীপুজোর অপরিহার্য অংশ হলো ভোগের আয়োজন। এই দিনে নানা ধরনের ফল, নাড়ু, মোয়া, লুচি, সুজি এবং অবশ্যই খিচুড়ি ও লাবড়া প্রস্তুত করা হয়। নিরামিষ এই ভোগ ভক্তি সহকারে দেবীকে নিবেদন করা হয়। পূজা শেষে পরিবারের সকলে একসাথে সেই প্রসাদ গ্রহণ করেন।
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা: মা লক্ষ্মী পরিচ্ছন্নতা ভালোবাসেন। তাই পুজোর আগে বাড়ি ও পূজার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে পবিত্র রাখাটা খুব জরুরি। এই রাতে সাত্ত্বিক (আমিষ বর্জন করে) জীবনযাপন করা এবং মনকে শান্ত ও পবিত্র রাখাও বাঞ্ছনীয়।
৫. ব্রতকথা শ্রবণ: অনেকেই এই দিন লক্ষ্মীদেবীর ব্রতকথা পাঠ করেন বা শোনেন। ব্রতকথা পাঠের মাধ্যমে লক্ষ্মী আরাধনার মহিমা ও ফল সম্পর্কে জানা যায়, যা ভক্তের মনে ভক্তিভাব বৃদ্ধি করে।
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি জ্যোতিষশাস্ত্রের গণনার ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে লেখা সব কথা আগামী দিনে সত্য প্রমাণিত হবে, এমন দাবি করা হচ্ছে না। জ্যোতিষশাস্ত্র সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন বা কোনও সমস্যার সমাধানের জন্য পেশাদার জ্যোতিষীর সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।