সাধারণত, কুণ্ডলীতে শনিদেবের অবস্থান শক্তিশালী না হলে মানুষ ভয় পায়। কেউ কেউ শনির নামকেও ভয় পায়। এর কারণ হল শনিকে বলা হয় ন্যায়ের দেবতা, ফলাফল দাতা এবং তিনি ছোটখাটো ভুলের জন্যও শাস্তি দেন।
তবে এর সঙ্গে সঙ্গে যারা ভালো কাজ করে তাদের উপর শনিদেবও তার আশীর্বাদ বর্ষণ করেন এবং এই ধরনের লোকদের জীবন সুখে ভরে যায়। শনিদেবকে কলিযুগ এ বিচারক বলা হয়। কিন্তু হিন্দু ধর্মে এমন তিনটি দেবতা রয়েছে, শনিদেব তাদের পুজো করা ভক্তদের কখনো কষ্ট দেন না। বরং এই ধরনের ব্যক্তিরা শনিদেবের কাছ থেকে শুভ ফল পান। শনিদেব ভগবান শিব, শ্রী হনুমান এবং শ্রী কৃষ্ণের ভক্তদের উপর থাকেন সদা সদয়।
কথিত আছে যে যারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত এবং তাঁর উপাসনা করেন শনিদেব তাদের কখনও কষ্ট দেন না। তবে আসুন জেনে নিই এর কারণ কী।
কথিত আছে শনিদেবও শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় সকল দেব-দেবী নন্দগাঁওয়ে এসেছিলেন। শনিদেবও এখানে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু কৃষ্ণের মা যশোদা শনিদেবকে ঘরে ঢুকতে দেননি। এর কারণ ছিল শনির কুদৃষ্টি যেন তার সন্তান কানহার ওপর না পড়ে এবং তার কোনও ক্ষতি না হয়। এতে শনিদেব খুব দুঃখ পেয়েছিলেন এবং তিনি নিকটবর্তী বনে গিয়ে তপস্যা করেন।
কিছু সময় পর, যখন শ্রী কৃষ্ণ তাঁর ঐশ্বরিক বাঁশি বাজালেন, তখন বাঁশির মিষ্টি ধ্বনি নন্দগাঁওয়ের মহিলাদের আকৃষ্ট করে এবং ভগবান কৃষ্ণ নিজেকে কোকিলা (কোকিল) রূপে রূপান্তরিত করে শনিদেবের কাছে আবির্ভূত হন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শনিদেবের সামনে হাজির হয়ে তাঁর তপস্যার কারণ জানতে চাইলেন। শনিদেবও ভগবানকে তাঁর শিশু কৃষ্ণকে দেখতে না পাওয়ার দুঃখের কথা জানান। এর পরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শনিকে বর দেন যে বা যারা তাঁর পুজো করবেন তারা তাদের কষ্ট থেকে মুক্তি পাবেন এবং এর পরে তিনি শনিদেবকে নন্দনবনে থাকতে বলেছিলেন। সেই থেকে মথুরার এই স্থানটি কোকিলাবন শনিধাম নামে পরিচিত।