বাংলা নিউজ > ভাগ্যলিপি > Lokenath Brahmachari: লোকনাথ বাবার যে ছবিটি আমরা দেখি, তার পিছনে আছে রহস্যময় কাহিনি! পড়ুন সেটি

Lokenath Brahmachari: লোকনাথ বাবার যে ছবিটি আমরা দেখি, তার পিছনে আছে রহস্যময় কাহিনি! পড়ুন সেটি

Updated: 04 Sep 2023, 01:37 PM IST Suman Roy

Lokenath Brahmachari: জন্মাষ্টমীতে লোকনাথ বাবারও জন্মদিন। তাঁর বহু কাহিনিই অনেকের অজানা। জেনে নিন, সেই তথ্য। 

1/8লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১১৩৭ বঙ্গাব্দ বা ইংরেজি ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে তত্কালীন যশোহর জেলা আর বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বারাসত মহকুমার চৌরশী চাকলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম রামনারায়ণ ও মায়ের নাম কমলা দেবী। 
2/8বিভিন্ন গ্রাম-শহর, নদ-নদী, জঙ্গল অতিক্রম করে প্রথমে কালীঘাটে এসে যোগ সাধনা শুরু করেন। এইরূপে গুরুর আদেশে বিভিন্ন স্থানে যোগ সাধনা ও ব্রত করে শেষ পর্যন্ত লোকনাথ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন। জেনে নেওয়া যাক, তাঁর কিছু আশ্চর্য কাহিনি।
3/8ঢাকার বারোদি গ্রামের শ্রীলোকনাথের একটি প্রতিকৃতিকে ঘিরে এমন এক রহস্যের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যা সত্যিই রোমাঞ্চকর। বাবা লোকনাথের যে ছবিটি আমাদের চেনা, তার উৎস একটি ফোটোগ্রাফ। ছবিটি তুলেছিলেন দেশীয় রাজ্য ভাওয়ালের তৎকালীন রাজা। আজ থেকে ১৩০ বছর আগে সেই ফোটো থেকে একটি পেন্টিং তৈরির কথা ভাবেন রেণুকা নাগ। রেণুকাদেবী ঢাকার বিখ্যাত নাগ পরিবারের প্রেমরঞ্জন নাগের স্ত্রী। রেণুকাদেবী লোকনাথ বাবার সেই ছবিটি দেখেন, যেটি ভাওয়ালের রাজা তুলেছিলেন। সেই ছবিটি ছিল নেহাতই ছোট— মাত্র ৩ ইঞ্চি বাই ৫ ইঞ্চি। 
4/8রেণুকাদেবী এর পরে ঢাকার এক প্রতিভাবান অথচ দরিদ্র শিল্পী দুর্গেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রীলোকনাথের একটি পেন্টিং আঁকার বরাত দেন। এবারেই শুরু হয় অতিলৌকিক কিছু ব্যাপার। দুর্গেশবাবু প্রথমে এ ফোর সাইজের একটি কাগজে প্রতিকৃতিটি আঁকতে শুরু করেন। সাদা কাগজে চাইনিজ ইঙ্কেই তিনি প্রাথমিক স্কেচটি করতে থাকেন। আসল প্রতিকৃতিটি তাঁর সামনে দেওয়ালে টাঙানো ছিল। স্কেচ কিছুদূর এগোনোর পরে এমন কিছু অনুভূতি দুর্গেশবাবুর হতে থাকে, যা ব্যাখ্যাতীত। তিনি জানান, আঁকতে আঁকতে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ছেন। এবং তার পরে কী ঘটছে, তিনি জানেন না।
5/8প্রকৃতপক্ষে দুর্গেশবাবুর একটা ঘোরের মধ্য চলে যাচ্ছিলেন। আবিষ্ট অবস্থায় দুর্গেশবাবুর হাত অবিশ্বাস্য গতিতে চলতে শুরু করে। একটি এ ফোর কাগজে বাবার মুখাবয়বটি আঁকা হয়। তাঁর শরীরের বাকি অংশ অন্য কয়েকটি এ ফোর-এ এঁকে একত্র করে পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করা হবে ঠিক হয়। সব শেষে দুর্গেশবাবু প্রতিকৃতির চোখ আঁকবেন বলে স্থির করেছিলেন। কিন্তু চোখ আঁকতে গিয়ে বার বার বিপত্তি দেখা দেয়। চোখ আঁকতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন, যে আবেশে তিনি পুরো ছবিটি এঁকেছেন, তা লুপ্ত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মতো করে প্রতিকৃতির চোখ আঁকেন।
6/8নাগ পরিবারের এক প্রবীণ সদস্যকে নিয়ে এসে সেই প্রতিকৃতি দেখানো হয়। তিনি জানান, বাল্যকালে তিনি বাবা লোকনাথকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তিনি দুর্গেশবাবুর আঁকা প্রতিকৃতির চোখের সঙ্গে বাবা লোকনাথের চোখের কোনও মিল নেই বলেন। বার বার দুর্গেশবাবু চোখ আঁকেন, বার বার সেই প্রবীণ ভদ্রলোকও হচ্ছে না বলে জানান দিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত অবস্থায় সেই ছবি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পড়ে থাকে।
7/8প্রায় দেড় বছর পরে এক শীতের রাতে দুর্গেশবাবু ঢাকায় বুড়িগঙ্গার ধারে একটি পার্কে বেড়াচ্ছিলেন। পার্কের দরজা দিয়ে বেরোতে গিয়ে তিনি টের পান সেটি বন্ধ এবং সামনে কেউ এসে দাঁড়িয়েছেন বলে মনে হয় তাঁর। মুখ তুলে তিনি দেখতে পান, এক দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ তাঁর সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। একটি আচ্ছাদনে তাঁর মুখটি ঢাকা। ফ্রেমে সেই পুরুষ তাঁর মুখাবরণটি সরান। দুর্গেশবাবু দেখতে পান, অতি তীব্র আলোকজ্যোতিসম্পন্ন চক্ষুদ্বয় নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বয়ং শ্রীলোকনাথ। দুর্গেশবাবু জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরতে তিনি কাউকে আর দেখতে পাননি। এবারে তিনি একদৌড়ে রেণুকাদেবীর বাড়ি আসেন এবং দ্রুত হাতে প্রতিকৃতিতে চক্ষুদান করেন। পরের দিন সেই প্রবীণ ভদ্রেলোককে নিয়ে আসা হয়, তিনি প্রথম দর্শনেই চমকিত হন। 
8/8প্রকৃতপক্ষে এটিই শ্রীলোকনাথের প্রথম পেন্টিং। সত্যিই কী রয়েছে এই চোখের পিছনে? একটি মণি উর্ধ্বে আর একটি নিম্নে কেন? অনেকের মত, উর্ধ্বগামী চোখটি মহাবিশ্ব এবং নিম্নমুখী চোখটি অন্তঃস্থ জগতের প্রতীক। যা সমগ্র অধ্যাত্মবাদের মূলকথা। মহাযোগী লোকনাথ কি তাঁর অতিলৌকিক দর্শন দ্বারা শিল্পী দুর্গেশবাবুকে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন সেই দিন? আজও সমাধান হয়নি সেই রহস্যের।