সমস্ত মনস্কামনা পূরণ ও নীলকণ্ঠের আশীর্বাদ লাভের বিশেষ দিন মহাশিবরাত্রি চলতি বছরের ১১ মার্চ পালিত হবে। এদিন সমস্ত শিবভক্ত ও সাধক ভোলানাথকে প্রসন্ন করার জন্য উপবাস, ধ্যান ও বিশেষ পুজো করে থাকেন। শিবকে প্রসন্ন করার জন্য তাঁর পছন্দের সামগ্রী দিয়ে তাঁর আরাধনায় লিপ্ত হবেন সকলে। কিন্তু এমন কিছু পুজো সামগ্রী রয়েছে, যা শিব পুজোয় ব্যবহার করা উচিত নয়। শিবপুরাণে সে বিষয় উল্লেখও পাওয়া যায়। জেনে নিন, কী দিয়ে শিব পুজো করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে--
১. হিন্দু ধর্মে পুজো-অর্চনার সময় তুলসির বিশেষ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তুলসি বিষ্ণু, হনুমান ও কৃষ্ণের বিশেষ প্রিয়। কিন্তু শিবপুরাণ অনুযায়ী মহাদেবের পুজোয় তুলসি পাতার ব্যবহার করা উচিত নয়। উল্লেখ্য, অসুর জলন্ধরের স্ত্রী বৃন্দার অশ্রু থেকে তুলসীর উৎপত্তি হয়েছিল। যাঁকে নিজের স্ত্রী রূপে স্বীকার করেছিলেন বিষ্ণু। তাই বিষ্ণু পুজোয় তুলসী ব্যবহৃত হলেও, শিব আরাধনায় তুলসীর ব্যবহার বর্জিত।
২. শিবলিঙ্গে ভুল করেও সিঁদূর বা কুমকুম অর্পণ করবেন না। শিব বৈরাগী ও কুমকুম সৌভাগ্যের প্রতীক।
৩. শিব আরাধনায় হলুদের ব্যবহারও বর্জিত। তাই পুজোর সময় শিবকে হলুদ অর্পণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৪. ভাঙা চাল দিয়ে শিবের পুজো করবেন না। অক্ষতর অর্থ অটুট চাল, এটি সম্পূর্ণতার প্রতীক।
৫. শিব পুজোয় শাস্ত্র সম্মত বাসনের ব্যবহার করা উচিত। ভুলেও লোহা, স্টিল ও প্লাস্টিকের বাসন ব্যবহার করবেন না।
৬. শিবের আশীর্বাদ লাভের জন্য ক্রোধ ত্যাগ করুন। অর্থাৎ মহাশিবরাত্রির উপবাসের সময় অযথা ঝগড়া-লড়াই করবেন না। শান্ত মনে পুরো দিন ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করুন।
৭. প্রচলিত আছে যে, বিষ্ণুর শরীরের ময়লা থেকে তিলের উৎপত্তি। তাই শিবলিঙ্গে তিল অর্পণ করা উচিত নয়।
৮. শিব পুজোয় নারকেলের ব্যবহারও অনুচিত। নারকেল লক্ষ্মীর প্রতীক। লক্ষ্মী বিষ্ণুর স্ত্রী। তাই শিবলিঙ্গে নারকেল অর্পণ করা উচিত নয়।
৯. শিবলিঙ্গে শঙ্খ দিয়ে জল অর্পণ করা নিষিদ্ধ। শাস্ত্রমতে শঙ্খচূড় নামক অসুরের বধ করেছিলেন মহাদেব। শঙ্খকে সেই অসুরেরই প্রতীক মনে করা হয়, যে ভগবানের ভক্ত ছিল।
১০. মহাদেবের বিশেষ আশীর্বাদ লাভের আশায় থাকলে, মহাশিবরাত্রির দিনে প্রাতঃকাল শিবলিঙ্গে জল অর্পণ করুন। শিবরাত্রির দিনে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা অশুভ মনে করা হয়।