বাংলা নিউজ > ভাগ্যলিপি > Aranya sasthi: আগামিকাল অরণ্য ষষ্ঠী, কী আচারে করবেন মা ষষ্ঠীর পুজো, জেনে নিন

Aranya sasthi: আগামিকাল অরণ্য ষষ্ঠী, কী আচারে করবেন মা ষষ্ঠীর পুজো, জেনে নিন

আসলে আগেকার দিনে অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যেই চালু ছিল মেয়ে যতদিন সন্তানের জন্ম না দিচ্ছেন ততদিন জামাইবাড়িতে যেতে পারতেন না মেয়ের মা-বাবারা। ফলত, মেয়েকে এই একটা দিন বাড়িতে ডেকে প্রাণ ভক্ষরে আদর করতেন। জামাইকেও খাইয়ে খুশি রাখতেন যাতে সে মেয়ের দেখভাল করে। সঙ্গে পুজো করা হত, যাতে মেয়ে খুব তাড়াতাড়ি সন্তানের মা হয়ে যায়। এখন যদিও এই প্রথা ভেঙেছে, জামাইষষ্ঠীর পিছনে থাকা এই ইতিহাস বা পুরাণকথাও খাটে না! বরং, এদিনটায় গোটা পরিবার একসঙ্গে হয়। হাসিমজায় কাটে একটা গোটা দিন। (ছবি-সংগৃহিত)

Aranya sasthi: জৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় অরণ্য ষষ্ঠী। আগামীকাল শাশুড়িরা কী ভাবে পালন করবেন অরণ্য ষষ্ঠী, জেনে নিন এখান থেকে।

জৈষ্ঠ মাসে শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় অরণ্য ষষ্ঠী। এই ষষ্ঠী বাংলার ঘরে ঘরে জামাইষষ্ঠী নামেও পরিচিত। বাংলার ঘরে ঘরে মায়েরা এই ষষ্ঠী পালন করে থাকে। এই ষষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক লৌকিক কাহিনি। এখানে যেমন একদিকে মা ষষ্ঠীর কাছে সন্তানের জন্য প্রার্থনা করা হয় তেমনি জামাইকে বরণ করে তাকে পুত্রের সমান মর্যাদা দেয়া হয়।

এই সময় আম জাম কাঁঠাল প্রভৃতি নানা মর সুমী ফলের সমারোহ দেখা যায়। ফলে খুব ঘটা করে এই দিন শাশুড়িরা ষষ্টীর পুজো করেন। তারপর নেমন্তন্ন করে নিয়ে আসা জামাইকে আসনে বসিয়ে কপালে দইয়ের ফোঁটা দিয়ে আশীর্বাদ করেন ও দীর্ঘ জীবন কামনায় তেল হলুদে ডোবানো সুতো হাতে বেঁধে দেন। এরপর আশীর্বাদী বস্ত্র জামাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন মিষ্টান্ন সহযোগে নানা ফল খেতে দেওয়া হয়।

কীভাবে শাশুড়িরা মা ষষ্ঠীর আরাধনা করেন

অন্যান্য ষষ্ঠীর মত এই ব্রততেও উল্লেখযোগ্য হলো পুজোর ডালি। পুজোর ডালিতে কাঁঠাল পাতার উপর সাজানো থাকে পাঁচ সাত বা নয় রকমের ফল। তার মধ্যে একটি হতেই হবে করম চা। আর থাকে ১০৮ গাছা দূর্বা, ষষ্ঠী পুজো উপলক্ষে শাশুড়িরা ভোরবেলা স্নান করে ঘটে জল ভরে নেয়। তারপর ঘটের উপর আম্র পল্লব স্থাপন করে। সঙ্গে রাখে তাল পাতার পাখা । ১০৮টি দূর্বা বাঁধা আটি দিয়ে পুজোর উপকরণ সাজানো হয়। করমচা সহ পাঁচ থেকে সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার উপর সাজিয়ে রাখতে হয় শাশুড়িকে। এরপর সুতো তেল হলুদে রাঙিয়ে তাতে ফুল বেল পাতা সাজানো হয়। এরপরে মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। এরপর ব্রত কথা পাঠ করে সবাইকে বাতাস দিয়ে সন্তান ও জামাইয়ের হাতে ষষ্ঠীর সেই সুতো বেঁধে উপবাস ভঙ্গ করে শাশুড়িরা। জামাইকে ঘটের জলে ভেজানো পাখা দিয়ে বাতাস করা হয়।

জামাইষষ্ঠীর প্রত্যেকটা আচার অনুষ্ঠানে ভীষণভাবে অর্থবহ। যেমন ফুল বেলপাতা দিয়ে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়ার অর্থ হল তোমার সঙ্গে আমার পরিবারের বন্ধন। অর্থাৎ মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের বন্ধন যাতে অটুট থাকে এবং সুখপ্রদ হয়। পাখা দিয়ে হাওয়া করার অর্থ হলো যাতে পরিবেশ শান্ত থাকে এবং জামাই এর সমস্ত আপদ বিপদ কেটে যায়।

তিন বার ষাট ষাট ষাট বলার অর্থ হলো দীর্ঘায়ু কামনা করা। ধান সমৃদ্ধি ও বহু সন্তানের প্রতীক। দূর্বা হলো চিরসবুজ ও চির সতেজতার প্রতীক। এই সব কিছুই জামাইয়ের মঙ্গল কামনার জন্য শাশুড়িরা করে থাকেন যাতে মেয়ে সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারে। তাদের সাংসারিক জীবন সুখের হয় সেই প্রার্থনাই করে থাকেন মা ষষ্ঠীর কাছে।

বন্ধ করুন