আগামীকাল অষ্টনাগ তথা মনসার পুজো। মা মনসার উড়লে ক ব্রহ্মবৈবত্ত পুরাণে পাওয়া যায়। এই পুরানে মা মনসার বারটি নামের উল্লেখ রয়েছে। এই বারটি নাম হলো জগত কারী, জগদেগৌরী, মনসা, সিদ্ধযোগিনী, বৈষ্ণবী, নাগভগিনী, শৈবী, নাগেশ্বরী, জগৎকারুপ্রিয়া, আস্তিকমাতা, বিষহরী, মহাজ্ঞানযুক্তা। পুজো কালে যিনি মা মনসার দ্বাদশ নামের পাঠ করেন তার কোনও ভয় থাকে না।
মা মনসার সঙ্গে অষ্টনাগের পুজো হয়। এই অষ্ট নাগ হলেন অনন্ত, বাসুকী, পদ্ম, মহাপদ্ম, তক্ষক, কুলির, কর্কট ও শঙ্খ। এই অষ্টনাগ একদিকে যেমন অষ্টবিধ সিদ্ধির কথা বোঝায়, তেমনি অপরদিকে অষ্টপাশের কথাও বোঝায়। আমরা যেমন সর্প দেখে ভীত হই তেমনি অষ্টপাশের দ্বারাও আমরা জর্জরিত। মায়ের পুজোতে আমরা যেমন নাগ থেকে পরিত্রাণ প্রার্থনা করি তেমনি মা মনসার স্মরণ নিলে তিনি অষ্টপাশগুলি থেকেও আমাদের ভয় মুক্ত করেন। সর্প হল কুন্ডলিনী শক্তির প্রতীক, এটাই হল অষ্টনাগ পুজোর তাৎপর্য।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মা মনসা পূজিত হন বৃক্ষের ডালে অথবা কোথাও সাপের ছবি আঁকা ঘট কিংবা ঝাঁপিতে। এই দিন মা মনসার মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। ভক্তরা দেবীর পুজো করে। সারাদিন উপবাস করে ভক্তরা দুধ দিয়ে দেবী মনসার পুজো করে থাকেন। অনেক জায়গায় মনসা গাছেও পুজো করা হয়। মা মনসা নাগদের দেবী। তার পুজো করলে মন থেকে সাপের ভয় দূর হয়। মায়ের কৃপা দৃষ্টিতে ভক্তদের দুঃখ দুর্দশা দূর হয়।
বর্ষাকালে সাপের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় বহু মানুষ আগে সাপের কামড়ে প্রাণ হারাতো। সেই সময় দেবী মনসার পুজোর প্রচলন শুরু হয়। কোনও কোনও বাড়িতে পুরোহিত ডেকেও মনসা পুজোর আয়োজন করা হয়। মনে করা হয় এই দিন মা মনসার আরাধনা করলে এবং অষ্টন আগের পুজো করলে নাগরাজের অশুভদৃষ্টি থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। কোনও কোনও জায়গায় কিন্তু আমিষ ভোগ দিয়েও মা মনসার পুজো করা হয়। সে ক্ষেত্রে বিশেষ নিয়ম মেনে এই পুজো করা হয়ে থাকে।