সনাতন ধর্মে শঙ্খকে অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। কারণ লক্ষী এবং বিষ্ণু হাতে শঙ্খ ধারণ করেন। বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী, লক্ষ্মী সমুদ্র রাজার কন্যা এবং শঙ্খ তাঁর সহোদর ভাই। তাই মনে করা হয়, যেখানে শঙ্খ থাকে সেখানে লক্ষ্মীর বাস নিশ্চিত। এই কারণে শঙ্খ পুজো শুভ। শাস্ত্র অনুযায়ী, শঙ্খচূড়ের হাড় থেকে শঙ্খের উৎপত্তি। তাই একে সমস্ত পবিত্র বস্তুর মধ্যে পরম পবিত্র এবং মঙ্গলের মধ্যে সর্বাধিক মঙ্গলকারী মনে করা হয়।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে শঙ্খকে মাঙ্গলিক চিহ্ন হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। বাড়িতে শঙ্খ রাখলে, তা বাস্তু দোষ ও কাটিয়ে উঠতে পারে, এর পাশাপাশি ধন-সম্পত্তি এবং আরোগ্য লাভ হয়। যদি বাড়ীর কোনও অংশে বাস্তুদোষ থাকে, তাহলে সেখানে শঙ্খ রাখলে সেই দোষ সমাপ্ত হয় এবং বাড়িতে সমৃদ্ধি আসে।
শঙ্খনাদের ধ্বনি যতদূর পৌঁছয় ততদূরের বায়ু শুদ্ধ হয়ে ওঠে। বাস্তু বিজ্ঞান অনুযায়ী, নিয়মিত শঙ্খনাদ করলে ঘুমন্ত জমিও জেগে ওঠে। ভূমি জাগ্রত হলে রোগ-শোক-কষ্ট লাঘব হয় এবং পরিবারের সদস্যরা সুখ-সমৃদ্ধির দিকে পা বাড়ান। পুজোর সময় শঙ্খ বাজানোর উদ্দেশ্যই হল, আশপাশের পরিবেশ শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলা।
দক্ষিণাবর্তী শঙ্খের শীর্ষে চন্দ্র, মধ্যে বরুণ, পৃষ্ঠ ভাগে ব্রহ্মা এবং অগ্রভাগে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর বাস। এর পবিত্র জলকে তীর্থসম মনে করা হয়। যে ব্যক্তি শঙ্খের জলে স্নান করেন, তিনি সমস্ত তীর্থস্থানে স্নানের ফল লাভ করেন। যেখানে শঙ্খ থাকে সেখানে বিষ্ণু ও লক্ষী সব সময় বসবাস করেন। বাস্তু দোষের প্রভাব কম করার জন্য শঙ্খে গরুর দুধ রেখে সারা ঘরে ছিটানো উচিত।
শঙ্খধ্বনি আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন। শঙ্খকে জয়ের প্রতীক মনে করা হয়। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শুরুতে শঙ্খধ্বনি করা হয়, যাতে আশপাশের নেগেটিভ এনার্জিকে শেষ হয়ে যায়। আবার এর ফলে সেখানকার পরিবেশে উপস্থিত কীটাণূ নষ্ট হয়। শঙ্খের জল সকলকে পবিত্র করে তুলতে পারে। তাই পূজা-আরতির পর শঙ্খের জল ছিটানো হয়।
বাস্তু অনুযায়ী, যে ঘরে শঙ্খ থাকে তাঁর প্রত্যেকটি কোণায় পজিটিভ এনার্জির সঞ্চার হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী যে বাড়ির পুজো স্থানে লক্ষীর সঙ্গে শঙ্খ স্থাপন করা হয় এবং তার নিয়মিত পুজো করা হয় সেখানে স্বয়ং লক্ষ্মী বাস করেন। এমন বাড়িতে ধন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয় না।