সারা ভারতে খুব উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয় হোলি কারণ এটা ভারতের অন্যতম প্রধান বড় উৎসব। এই দিনে রাধা কৃষ্ণ এক সঙ্গে গোপিনিদের সঙ্গে আবিরের রঙে মেতে উঠেছিলেন। ভারতে খুব বড় করে দোল উৎসব হয় বৃন্দাবনে। এখানে বহু মানুষের সমাবেশ হয় হোলির সময়। এখানে এক সপ্তাহ আগে থেকেই হোলি উৎসব পালিত হয়। হোলির আগে যে একাদশী হয় আসে সেই একাদশী থেকে এই উৎসব পালন শুরু হয়।
এখানে রঙের উৎসব হোলির আগে খেলা হয় ফুলের হোলি। পুরোহিত মশাই বাঁকে বিহারী মন্দিরে পুজো দিয়ে তারপরে এই খেলার সূচনা করেন। এই বিশেষ দিনে এখানকার মানুষ একে অপরের মুখে আবির লাগিয়ে দেন। বড়রা ছোটদের আশীর্বাদ করেন, ছোটরা আনন্দে মেতে ওঠে এবং মিষ্টি বিতরণ করা হয়। সেই সঙ্গে থাকে নানা রকম ভক্তিমূলক গান ও ভজনের আয়োজন।
হোলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাধা কৃষ্ণের ঐশ্বরিক প্রেমের কাহিনি। এখানে হোলি উৎসব একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। হোলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পৌরাণিক কাহিনিও। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন কৃষ্ণ বর্ণের। তিনি চিন্তিত ছিলেন যে তিনি কৃষ্ণ বর্ণের, আর তার প্রিয় সখী সেই শ্রী রাধা ছিলেন উজ্জ্বল বর্ণের, তাই হয়তো তিনি কৃষ্ণকে পছন্দ করবেন না। তখন তাঁর মা যশোদা কৌতুকপূর্ণভাবে বলেন যে রাধা কে রং মাখিয়ে দিতে তাহলে রাধা কৃষ্ণের বর্ণের মধ্যে আর কোনও তফাৎ থাকবে না।
সহজ সরল কৃষ্ণ তাই করেন, মনে করা হয় সেই থেকে এখানে প্রচলিত হয় রংয়ের উৎসব হোলি খেলা। রাধা কৃষ্ণের ঐশ্বরিক প্রেমকে সম্মান দিতে এখানে বিশেষ উৎসাহের সঙ্গে হোলি পালন করা হয়। হোলির সঙ্গে পালিত হয় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে থাকে গান, নিত্য পরিবেশন এবং ভজন ভক্তিগীতি। অনুষ্ঠান শেষে তাকে খাবারের ব্যবস্থা। হোলি শুধু আধ্যাত্মিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির বাহক।
বৃন্দাবনে বাঁকে বিহারী মন্দিরে ফুলের হোলি খেলা সারা ভারত বিখ্যাত। এই স্থানে হোলি খেলা শুরু হয় দোলের আগে রঙ্গভরী একাদশী থেকে। এই বৃন্দাবনের আর একটা ঐতিহ্যবাহী প্রথা হলো বিধবাদের নিয়ে হোলি খেলা। এই সময়ে মানুষ ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে হোলি খেলায় মেতে ওঠে। সামাজিক নিয়ম কানুন বিধি নিষেধের চোখ রাঙানি এই সময় উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রাচীন প্রথাকে সম্মান এর সঙ্গে পালন করে আসছে বৃন্দাবনবাসি।