আজ জয়া একাদশীর উপবাস পালন করা হচ্ছে। আজ ভগবান বিষ্ণুর পূজা করার নিয়ম। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে যথাযথভাবে উপাসনা ও উপবাস করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মোক্ষলাভ হয়। এবার জয়া একাদশীতে তৈরি হচ্ছে বিশেষ যোগ। এই দিনে উপবাসের পাশাপাশি একাদশী কথা পাঠ করতে হবে। পদ্মপুরাণ অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরকে জয়া একাদশীর মহিমার কথা বলেছিলেন। জয়া একাদশীর সম্পূর্ণ উপবাসের কাহিনি জেনে নিন।
পদ্মপুরাণ অনুসারে, এক সময় স্বর্গে অবস্থিত নন্দন বনে এক উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছিল। এই উৎসবে সমস্ত দেবগণ, সিদ্ধগণ ও ঋষিগণ উপস্থিত ছিলেন। তখন উৎসবে নাচ-গানের অনুষ্ঠান চলছিল। গন্ধর্ব ছেলে ও মেয়েরা নাচ-গান করছিল। একই সময়ে নর্তকী পুষ্যবতীর দৃষ্টি পড়ে গন্ধর্ব মাল্যবানের উপর। মাল্যবানের যৌবনে নর্তকী পুষ্যবতী মুগ্ধ হয়ে পড়েন। এর ফলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অসংলগ্ন ভাবে নাচতে থাকেন।
ওদিকে, মাল্যবানও ঠিক করে গান গাইতে পারেন না। এতে সভায় উপস্থিত সকলে ক্ষুব্ধ হন। এটা দেখে স্বর্গীয় রাজা ইন্দ্র ক্রোধান্বিত হয়ে দু’জনকেই স্বর্গ থেকে তাড়িয়ে দেন। সঙ্গে অভিশাপ দেন যে, দু’জনের খারাপ জন্ম হবে এবং খারাপ জীবন কাটবে। এর পরে তাঁরা হিমালয়ে আসেন। এবং দু’জনেই মর্ত্যলোকের যোনিপথে যন্ত্রণাদায়ক জীবনযাপন করতে থাকেন।
একবার মাঘ মাসের একাদশী অর্থাৎ জয়া একাদশী এলে মাল্যবান ও পুষ্যবতী কোনও খাবার না খেয়ে ফলমূল খেয়ে দিন কাটান, সেই সঙ্গে দুঃখ ও ক্ষুধার কারণে উভয়েই রাত জাগতে থাকেন। এই সময় উভয়েই শ্রীহরিকে স্মরণ করেন ও পাঠ করলেন। উভয়ের ভক্তিতে খুশি হয়ে ভগবান নারায়ণ পুষ্যবতী ও মাল্যবানকে ভূত যোনি থেকে মুক্ত করেন।
ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় দুজনেই সুন্দর দেহ লাভ করলেন এবং দুজনেই আবার স্বর্গে যান। সেখানে পৌঁছে ইন্দ্রকে প্রণাম করলে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। এর পর তিনি পিশাচের যোনি থেকে মুক্তির উপায় জিজ্ঞাসা করেন। মাল্যবান জানান, একাদশীর উপবাসের প্রভাবে এবং ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় দুজনেই পিশাচের যোনি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। একইভাবে যে ব্যক্তি জয়া একাদশীর উপবাস করেন, তিনি মোক্ষ লাভ করে।
এর পর থেকেই পৃথিবীতে জয়া একাদশী পালিত হয়ে আসছে। ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয় এই দিনে।