ভগবান বিষ্ণুকে দশাবতার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ভগবদ্গীতায় লেখা আছে যে পৃথিবীতে যখনই পাপ বেড়েছে, তখনই ভগবান বিষ্ণু অধর্ম দূর করতে এবং ধার্মিকতাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য পৃথিবীতে অবতারণা করেছিলেন।
এর মধ্যে একটি হল ভগবান বিষ্ণুর কূর্ম অবতার। কূর্ম অর্থাৎ শ্রী হরি কচ্ছপের রূপ ধারণ করে বিশ্বকে রক্ষা করেছিলেন। কূর্ম জয়ন্তী প্রতি বছর বৈশাখ পূর্ণিমায় পালিত হয়। এই বছর কবে কূর্ম জয়ন্তী, আসুন আমরা এই উৎসবের তারিখ, পুজোর শুভ সময় এবং গুরুত্ব জেনে নিই।
কূর্ম জয়ন্তী ২০২৪ তারিখ: ২৩ মে ২০২৪ এ কূর্ম জয়ন্তী পালিত হবে। এই দিনটি বৃহস্পতিবার, যা ভগবান বিষ্ণুর দিন হিসাবে বিবেচিত হয়, তাই এই উৎসবের গুরুত্ব দ্বিগুণ বেড়েছে এই বার। কূর্ম জয়ন্তীর সন্ধ্যায় শ্রী হরির পুজো করা হয়।
কূর্ম জয়ন্তী ২০২৪ সময়: ক্যালেন্ডার অনুসারে, বৈশাখ পূর্ণিমা ২২ মে, ২০২৪ তারিখে সন্ধ্যা ০৬ টা ৪৭ মিনিটে শুরু হবে এবং ২৩ মে ২০২৪ তারিখে সন্ধ্যা ০৭ টা ২২ মিনিটে শেষ হবে।
কূর্ম জয়ন্তী পুজোর মুহূর্ত- বিকেল ৪ টে ২৫ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ০৭ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। সময়কাল ০২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট।
কূর্ম জয়ন্তীর তাৎপর্য: বিভিন্ন পুরাণে ভগবান বিষ্ণুর কূর্ম অবতারের উল্লেখ আছে। লিঙ্গ পুরাণ অনুসারে, পৃথিবী যখন রসাতলের দিকে যাচ্ছিল, তখন ভগবান বিষ্ণু কচ্ছপের রূপে অবতীর্ণ হয়ে পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, সমুদ্র মন্থনের সময় মান্দারাচল পর্বত হ্রদে ডুবে গেলে ভগবান বিষ্ণু কচ্ছপের রূপ ধারণ করে পিঠে বয়ে নিয়ে যান। কূর্ম জয়ন্তীতে ভগবান বিষ্ণুর কচ্ছপ অবতারের পুজো করলে মোক্ষ লাভ হয়।
কূর্ম জয়ন্তী কথা: নরসিংহ পুরাণ অনুসারে, কুর্মাবতার হল ভগবান বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার, যেখানে ভগবত পুরাণ অনুসারে, তিনি ভগবান বিষ্ণুর একাদশ অবতার। কিংবদন্তী অনুসারে, ঋষি দূর্বাসা ইন্দ্রের উপর ক্রুদ্ধ হন এবং দেবতাদেরকে শ্রী হীন হওয়ার অভিশাপ দিয়ে তাদের সুখ ও সমৃদ্ধি ধ্বংস করেন। মা লক্ষ্মী সমুদ্রে অদৃশ্য হন, চারদিকে হাহাকার পড়ে যায়। অতঃপর ভগবান বিষ্ণুর আদেশে ইন্দ্র রাক্ষস ও দেবতাদের নিয়ে সমুদ্র মন্থন করতে প্রস্তুত হলেন।
সমুদ্র মন্থন এর সময় নাগরাজ বাসুকিকে দড়ি বানানো হয়, কিন্তু মন্দারচলের নীচে কোনও শক্ত ঘাঁটি না থাকায় তা সমুদ্রে ডুবে যেতে থাকে। তাই দেখে ভগবান বিষ্ণু বিশাল কূর্ম (কচ্ছপের) রূপ ধারণ করে সমুদ্রে মন্দারচলের সহায় হন। সেদিন ছিল বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা। এই দিনটিই পালিত হয় কূর্ম জয়ন্তী হিসাবে।