প্রতিবছর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয়। এই পুজো দুর্গা পূজার মতো সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মহা সমারোহে হয়ে উদযাপিত করা হয়৷ দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অনেক জায়গাতেই হয়, তার মধ্যে কৃষ্ণনগর চন্দননগর বিখ্যাত কিন্তু এবছর মেদিনীপুর শহরে বহু জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে ৷দেবী জগদ্ধাত্রী চর্তুভুজা, মা দুর্গার মত তার দশ হাত নেই। চার হাতেই তিনি অসুরদলনী, অসুর দমন করছেন ৷
মা দুর্গারই অন্য রূপ হল দেবী জগদ্ধাত্রী ৷ তাই দেবী জগদ্ধাত্রী পূজার নিয়ম কানুন সবটাই মা দুর্গার মতই ৷ দেবী দুর্গার মূর্তিতে ১০ হাত থাকে তিনি সিংহের উপর দাঁড়িয়ে আছেন ৷ মহিষাসুরকে বধ করে তার বুকে ত্রিশূল গেঁথে দিচ্ছেন এমন রূপটি দেখতে পাই আমরা মা দুর্গার, সেখানে জগদ্ধাত্রী দেবীকে আমরা দেখি তার বাহন সিংহ কিন্তু তিনি এক মৃত হাতির উপর দাঁড়িয়ে আছেন আসলে তিনি যে অসুরকে বধ করেছিলেন তার নাম করিন্দ্রাসুর তিনি হাতি রূপে মায়ের সামনে এসেছিলেন এবং সেই অসুরকে দমন করতে মা জগদ্ধাত্রী রূপ নেয় মা দুর্গা, এমনটাই মনে করা হয় ৷ আবার অন্যদিকে এমন কাহিনী ও প্রচলিত আছে যে দেবতাদের অহংকার ভাঙার জন্য মা জগদ্ধাত্রীর আবির্ভাব হয়েছিল তিনি দেবী দুর্গার পুনর্জন্মের রূপ।
দেবী দুর্গার মত মা জগদ্ধাত্রী ও ত্রিনয়নী ৷ তার গলায় থাকে নাগ যজ্ঞপোবিত তার দুই বাম হাতে থাকে শঙ্খ ও শাঙ্গধনু ডানহাতে থাকে চক্র ও পঞ্চবাণ। এই পঞ্চাবান দিয়েই তিনি বধ করেছিলেন করিন্দ্রাসুরকে, সেই জন্য মা জগদ্ধাত্রীর আরেক নাম করিন্দ্রাসুরনিসূদণী।
চন্দননগরের পুজো গুলো অনেক প্রাচীন পুজো, কিন্তু তার সাথে সাথে কৃষ্ণনগরের যে পুজো গুলো হয় সেগুলোও অনেক প্রাচীন,বলতে গেলে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময় থেকে এই পুজোর প্রচলন হয় কৃষ্ণনগরে। সেই সময় কৃষ্ণচন্দ্রের সাথে ইন্দ্র নারায়ন চৌধুরীর বন্ধুত্ব হওয়ার সুবাদে ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী প্রথম চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার শুরু করেছিলেন। কৃষ্ণনগরের চাষা পাড়ায় বুড়িমার পুজো খুবই বিখ্যাত এখনো সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে আসে। শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে গেছে বুড়িমার পুজো ৷