হিন্দু ধর্মে প্রতিটি পূর্ণিমারই আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। আসন্ন কার্তিক পূর্ণিমারও আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। এই তিথির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহাদেবের ত্রিপুরারী নামটি। কেন মহাদেবতে ত্রিপুরারী বলা হয়? কেনই বা কার্তিক পূর্ণিমায় দেব দিপাবলী উপলক্ষ্যে সেজে ওঠে বারাণসীর কাশী ধাম? এই পূর্ণিমার তিথির সঙ্গে কোন যোগ রয়েছে দেবাদিদেব মহাদেবের? এই সবের উত্তর দেখা যাক।
ত্রিপুরারী নামকরণ ও পৌরাণিক কাহিনি:-
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, তারকাসুরের মৃত্যুর পর তার তিন ছেলে তারকাক্ষ, কমলাক্ষ ও বিদ্যানমালি, দেবগুরু ব্রহ্মার জন্য প্রখর আন্তরিকতা নিয়ে কঠোর তপস্যা করেন। তারা তারা তিনজন অসীম শক্তির বর পেয়েছিলেন। দেবতা ব্রহ্মা তাঁদের ভাসমান তিন শহর বর হিসাবে দান করেন। অনেকে এই শহরকে তিনটি দুর্গ (ত্রিপুরা) বলেও দাবি করেন। এই শহর শত বৎসর ভাসবে এবং , এর মধ্যে যাঁরা থাকবে, তাঁরা অজেয় নিরাপদ। তবে একটি তীর দিয়েই এই শহর বা দুর্গ একত্রিত করে আগুনে ভস্মীভূত করতে পারে। এরপর এই অসুররা তাণ্ডব চালাতে থাকেন। তারা দেবতা ও ঋষিদের ওপর অত্য়াচার করেন। ঋষি, মুনিরা তখন শিবের দ্বারস্থ হন। এরপর এত মহাজাগতিক তির দিয়ে তিন দুর্গ বা শহর যখন একত্রিত হয় সেই ত্রিপুরকে তিনি ধ্বংস করেন। আরও একটি বিশ্বাস বলে, যে ত্রিপুরাসুর নামে এক রাক্ষক প্রবল তাণ্ডব চালায় মুনি ও ঋষিদের ওপর। মর্ত্যবাসী অত্যিষ্ট হয়ে ওঠে। তখনই তির দিয়ে সেই অসুরকে নিধন করেন শিব। সেই থেকে শিবের অপর নাম ত্রিপুরারী। আর যে তিথিতে তিনি এই অসুর বধ করেন, সেই তিথিই হল দেব দীপাবলি।
পৌরাণিক মান্যতা কী বলে?
কার্তিক পূর্ণিমার দিনে প্রদোষকালে মহাদেব, রাক্ষস ত্রিপুরাসুর বধ করেছিলেন। এরপর সমস্ত দেবতারা শিবলোকে অর্থাৎ কাশীতে এসে দেব দীপাবলি উদযাপন করলেন। সেই থেকে কাশীতেও এই রীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। বিশ্বাস করা হয়, যে কার্তিক মাসের এই দিনে কাশীতে প্রদীপ দান করলে পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করেন। চলতি বছরে ১৫ নভেম্বর পড়েছে দেব দীপাবলি বা কার্তিক পূর্ণিমা।