সদ্য স্ত্রীহারা, ক্যানসার আক্রান্ত এক বৃদ্ধ ও তাঁর দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে সেই পরিবারের দুয়ারে পৌঁছে গেলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা। জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতার বার্তা দিলেন তাঁরা। পৌঁছে দিলেন প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহযোগিতা।
এই ঘটনা মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা ব্লকের মাজিয়ারা গ্ৰামের। এই গ্রামেরই বাসিন্দা পঙ্কজ ঘোষ। বছর পঁয়ষট্টির পঙ্কজ দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসার আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসা করতে গিয়ে ঘোষ পরিবারের আজ সর্বস্বান্ত হওয়ার জোগাড়।
এই অবস্থায় সম্প্রতি পঙ্কজ ঘোষের স্ত্রী নিয়তি ঘোষের মৃত্যু হয়। কিন্তু, হতদরিদ্র পরিবারটির পক্ষে নিয়তির শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খরচ বহন করা একপ্রকার অসম্ভব।
সূত্রের দাবি, এই খবর কোনওভাবে পৌঁছে যায় তৃণমূল সাংসদ তথা দলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি নিজে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় দলের স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে।
এরপরই ঘোষ পরিবারের দরজায় পৌঁছে যান তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা। সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা মাহে আলম।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, অসহায় এই পরিবারটি জন্য চাল, ডাল, তেল, নুন, আনাজপাতি, ফল-সহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী নিয়ে এসেছেন তাঁরা। এছাড়াও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিবারটির জন্য কিছু আর্থিক সহযোগিতা পাঠিয়েছেন।
এই সমস্ত কিছু সোমবার পঙ্কজ ঘোষ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন মাহে আলম ও তাঁর দলীয় সহকর্মীরা। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে যাতে প্রয়াত নিয়তি ঘোষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করতে এই পরিবারটির কোনও সমস্যা না হয়, তা দলের তরফে তাঁরা দেখবেন।
এছাড়া, বৃদ্ধ পঙ্কজ ঘোষের চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে আজ এই পরিবারটির হতদরিদ্র অবস্থা। তাই যখনই এই পরিবারের সদস্যদের কোনও প্রয়োজন হবে তিনি ও তাঁদের দলের অন্য সদস্যরা ঘোষ পরিবারের পাশে থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাহে আলম।
শাসকদলের এহেন উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত খুশি পঙ্কজ ঘোষ। তিনি এর জন্য নিজের কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ থেকে আরজি কর কাণ্ড, নানা নেতিবাচক কারণে ইদানীংকালে বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও তাদের নেতা-কর্মীরা।
এমনকী, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতে হয়েছে এই বড়ঞারই তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এহেন প্রতিকূল প্রেক্ষাপটে এভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যে শুধুমাত্র শান্তি, সম্প্রীতি ও মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছে, তাই নয়। সেইসঙ্গে তৃণমূলস্তরে মানুষের সঙ্গে দলের সম্পর্কও আরও মজবুত করছে।