অশোকনগরের কুমারেশ সাধু সদ্য বাইক দুর্ঘটনায় ব্রেন ডেথের শিকার হন। তবুও ২৪ বছর বয়সী যুবক বেঁচে রইলেন দেশের তিন শহরের তিনজন মানুষের মধ্যে। কুমারেশের অঙ্গদানের ফলে নতুন করে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেলেন জয়পুর, চেন্নাই, কলকাতার তিন বাসিন্দা। মরোণোত্তর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মধ্যে দিয়ে তিন শহরের তিনজন ফের একবার জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসার লড়াইতে পা বাড়িয়ে দিতে পারলেন।
কুমারেশের পরিবারের পদক্ষেপের জেরে মরোণোত্তর হৃদযন্ত্র গিয়েছে চেন্নাইতে। সেখানে এক হৃদযন্ত্র গ্রহীতা পেতে চলেছেন এই অঙ্গ। অন্যদিকে, মরোণোত্তর অঙ্গদানে লিভার পেতে চলেছেন জয়পুরের বাসিন্দা এক সিরোসিস রোগী। তাঁকে কলকাতায় আনা হয়েছে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশনের জন্য। এছাড়াও কিডনিটি প্রতিস্থাপিত হবে কলকাতার এক ষাটোর্ধ মহিলার দেহে। এর আগে গত সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে বাইক দুর্ঘটনার শিকার হন কুমারেশ। বছর ২৪ এর, যুবকের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। তাঁকে ভরতি করা হয়, হাসপাতালে। চিকিৎসকরা মঙ্গলবার বুঝতে পারেন যে ততক্ষণে ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে। তখনই পরিজনদের বিষয়টি জানানোর পর তাঁদের কাউন্সেলিং করা হয়। তাঁরা ওইদিনই অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সম্মতি দেন। তবে সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে এবি পজিটিভ ব্লাড গ্রুপের কোনও গ্রহীতার খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষে খবর যায় সুদূর চেন্নাইতে। সমবয়সী এক গ্রহীতার খোঁজ পাওয়া যায়, যাঁর প্রয়োজন ছিল এই অঙ্গটি। আর এভাবেই, তিন শহরের তিন মানুষ উপকৃত হন একটি পরিবারের কঠিন সময়ে নেওয়া বড় সিদ্ধান্ত থেকে। কুমারেশের পরিবারের সদস্যদের মতে, ভাইকে ফিরে পাওয়া তো আর গেল না, তবে এই তিনজন নবজীবন পেলেন, সেটাই বড় সান্ত্বনা।
উল্লেখ্য, জয়পুরের সিরোসিসের রোগীকে কলকাতায় আনা হয়েছে। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই রোগীর অপারেশন বুধবারই করা হয়। লিভার প্রতিস্থাপনের অপারেশন হয় অ্যাপোলোতেই। এদিকে, বুধবার চেন্নাইতে হার্টের প্রতিস্থাপনও সেরে ফেলা হয়। এদিকে, কিডনি প্রতিস্থাপনের সময় দেখা যায়, জন্মগতভাবে কুমারেশের একটিই কিডনি ছিল। আর তা পেলেন শহরেরই এক ষাটোর্ধ্ব মহিলা।