আগামী ১৬ ডিসেম্বর রয়েছে বাংলাদেশের বিজয় দিবস। সেই দিনের ইতিহাস স্মরণ করে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়ামে প্রতি বছরই আয়োজিত হয় এক বিশেষ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের এক প্রতিনিধি দল। উপস্থিত থাকেন ঢাকার তরফে অনেকে। আমন্ত্রিত হয়ে হাজির থাকেন কলকাতায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক ভবনের বিশিষ্টরা। তবে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের বিজয় দিবসে কি সেই ছবি দেখা যাবে? ধোঁয়াশার মেঘ জন্ম নিয়েছে দুই দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির খাতে।
বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করছে যে, এবারে ফোর্ট উইলিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানে সম্ভবত সেদেশের বহু প্রতিনিধিকেই দেখা যাবে না। উপস্থিত নাও থাকতে পারেন, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় নাও আসতে পারেন মুক্তি যোদ্ধারা।
পার হয়েছে ৫৩ টা বছর। সেই সময় এক শীতের চাদরে মোড়া ১৬ ডিসেম্বরে, মুক্তিবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকরা কলকাতা থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছন, সেখান থেকে ইস্টার্ন কমান্ডের সর্বাধিনায়ক জেনারেল অরোরার সঙ্গে হেলিকপ্টারে ঢাকা উড়ে গিয়েছিলেন। তারপর জেনারেল অরোরার সামনেই পাকিস্তানে লেফ্টন্যান্ট জেনারেল অকে নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন। বাংলাদেশ পায় স্বাধীনতা। দীর্ঘ রক্তাক্ত ইতিহাস শেষে আসে বিজয়। আর সেই দিনটিই বিজয় দিবস হিসাবে পরিচিত।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাক সেনার আত্মসমর্পণের দিনটি আজও কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে বেশ ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের কূটনীতিক আধিকারিকরা, সেনা কর্তা, এবং সর্বোপরি যুদ্ধের আসল নায়করা মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে সদ্য চলতি বছরে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হতেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সমীকরণে কিছুটা বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছিল বলে মনে করেছেন অনেকেই। তবে সপ্তাহ খানেক আগে বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসীদের গ্রেফতারির পর পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। বাংলাদেশে ক্রমাগত হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হয়। পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলে দিল্লি। এদিকে, ততক্ষণে আগরতলায় বাংলাদেশে সহকারী হাইকমিশনে বিক্ষভকারীদের প্রবেশের জেরে পরিস্থিতি তপ্ত হয়। ঘটনার নিন্দা করে দিল্লি। ঢাকা দাবি করে ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এরপর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। আগরতলায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক ভবন আপাতত পরিষেবার কাজ বন্ধ রেখেছে। এই পরিস্থিতিতো প্রশ্ন উঠছে, এবার কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশের বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে কি ওপার বাংলার প্রতিনিধিরা আসবেন? নজর রয়েছে দুই বাংলারই।