ভারতের করোনা পরিস্থিতি লাগামহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার হঠাৎই আগাম নোটিশ ছাড়াই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করার ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকারের। সেদেশে ইতিমধ্যেই করোনার ভারতীয় স্ট্রেন নিয়ে আতঙ্ক বেড়েছে। এই আবহে প্রতিবেশী এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। তবে এই পদক্ষেপের জেরে বিপাকে পড়েছেন বহু বাংলাদেশি। ভারতে চিকিত্সা করাতে আসা বহু বাংলাদেশি আটকে পড়েছেন সীমান্তের এপারে। দেশে ফিরতে না পেরে তাই তাঁরা ক্ষুব্ধ।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ থেকে ভারত চিকিৎসা করতে আসা যাত্রীরা আটকে পড়েন উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে। আগাম নোটিশ ছাড়া যাত্রী পারাপার বন্ধ করায় তাঁদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।
করোনা প্যানডেমিকের দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতের সংক্রামণের গ্রাফ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। সেই কারণেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই আবহে সীমান্তে অপেক্ষারত বাংলাদেশিদের অভিযোগ, এটা আচমকা নেওয়া একটা সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে ফিরতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া উচিত ছিল। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পেট্রাপোল পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভ দেখান সীমান্ত পার করতে চাওয়া বাংলাদেশিরা।
রবিবার বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ২৬ এপ্রিল থেকে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সীমান্ত বন্ধের নির্দেশিকা জারি করা হয়। ফলে ভিসা নিয়ে নতুন করে কেউ দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন না। পাশাপাশি যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিভিন্ন কারণে ভারতে এসেছেন, তাঁদের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে তবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সোমবার সকাল থেকেই পেট্রাপোল সীমান্তে দেখা যায় বহু বাংলাদেশি নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। তাঁদের বক্তব্য, বাংলাদেশ সরকার তো জানে এখন মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন অনেকেই। তাঁদের অন্তত একদিন আগে জানানো দরকার ছিল। তাহলে ফিরে যেতে পারতাম। হঠাৎ করে বাংলাদেশ সরকারের এই নির্দেশে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। এখন তাঁরা কোথায় থাকবেন বা কীভাবে বাংলাদেশ ফিরবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের তাদের দেশের সরকারের কাছে দাবি, অন্তত দু'দিনের জন্য হলেও তাঁদের সময় দেওয়া হোক এবং যাঁরা পেট্রাপোল সীমান্ত আটকে রয়েছেন তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক সরকার।
প্রসঙ্গত, গতবছর লকডাউনের সময় পেট্রাপোল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত সরকার। পরে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাণিজ্য শুরু হয়।