বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারে ফের জিতে এসেছেন শান্তনু ঠাকুর। বিশ্বজিত দাসকে পরাজিত করে আরও একবার এই কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়েছে তিনি। সেই সুবাদে গতবারের মতো এবারেও নরেন্দ্র মোদীর সরকারের মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ঠাকুর বাড়ির এই সদস্য। গতবারের মতো, এবারেও তিনি জাহাজ প্রতিমন্ত্রী হিসেবেই কাজ করতে চলেছেন। গতবার এরাজ্য চারজন প্রতিমন্ত্রী থাকলেও এবারে সেই সংখ্যা কমে গেছে দুইতে। কারণ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ভালো পারফরমেন্স করেনি বিজেপি। ঘরোয়া কোন্দলেই জর্জরিত অবস্থা হয় বঙ্গ বিজেপির।
রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট দাবি করেন, ইচ্ছাকৃতবাবেই তাঁকে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মেদিনীপুরও হাতছাড়া হয়েছে, একই সঙ্গে বর্ধমান দুর্গাপুর এবং আসানসোল কেন্দ্রেও হারতে হয় বিজেপিকে। এবার দিলীপ ঘোষকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গেই মুখ খুলেছেন শান্তনু ঠাকুর। মন্ত্রীত্ব পাওয়ার আগেই HT বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না।
আরও পড়ুন-বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর জ্বলে উঠলেন বোল্টরা, উগান্ডার বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে জিতল কিউয়িরা
ইতিমধ্যেই নিজের কেন্দ্রের জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন তিনি। প্রথমেই তিনি যশোর রোডের বাকি রাস্তা ঠিক করতে চান। সেখানে বর্ষাকালে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়, এর আগেও কিছুটা কাজ করেছেন, রাস্তার ধারে বসেছে আলোক স্তম্ভ। বাকি কাজ এরই মধ্য়ে সেড়ে ফেলতে চান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলছেন, ' বিজেপি আমার লোকসভা কেন্দ্রে প্রচুর কাজ করেছে। পাঁচ বছর কম সময়, তাঁর মধ্যেই যতটা পেরেছি কাজ করেছি। স্থানিয় চাহিদাগুলো, এর আগে এখানকার সাংসদরা জানত না বা বুঝত না, কারণ তারা মূলত বাইরের থেকে এসেছিল। আমি লোকাল ছেলে তাই মানুষের কাজ করার চেষ্টা করি'।
আরও পড়ুন-টি২০ বিশ্বকাপ-এর ইতিহাসে এমন রেকর্ড এই প্রথমবার! লজ্জার রেকর্ডে সামিল উগান্ডা - ওমান
শান্তনু ঠাকুর বলছেন, রাজনীতিতে চড়াই উৎরাই থাকবেই, মানুষের ওপরই সব নির্ভর করে। হয়ত খারাপ পারফরমেন্স হয়েছে, আবার উন্নতিও হবে। তৃণমূলকে একহাত নিয়ে বনগাঁর সাংসদ বলছেন, ‘ রাজ্যের শাসক দলের লোকেরা ঠাকুর বাড়ি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে। তাঁরা এখানকার ইতিহাস জানে না, ওরা ভাবত মতুয়াদের হাতে নিলেই সব কিছু হবে। কিন্তু এখানে মতুয়াদের জন্য ঠাকুরবাড়ি যা করেছে, সেটা লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়ে ভুলিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তৃণমূল ভেবেছিল সেটা করবে, কিন্তু করতে পারেনি, কারণ আমাদের পূর্বপুরুষরা ২০০ বছর ধরে মানুষের সেবা করেছে এসেছে, তাই তাঁরা ঠাকুর বাড়ির পাশেই থাকবে’।
আরও পড়ুন-৫ গোলদাতা! ইউরো কাপে স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে হারিয়ে যাত্রা শুরু জার্মানির
বঙ্গ বিজেপিতে দলের হারের বিষয় তিনি বলছেন, ‘ ঠিক কি কারণে হার অন্য কেন্দ্রে বলতে পারব না, প্রার্থী পছন্দ না হয়ে থাকতে পারে। তবে এনডিএ সরকার গঠন করলেও প্রধানমন্ত্রীর সরকার চালাতে কোনও অসুবিধা হবে না নীতীশ কুমার, চন্দ্রবাবু নাইডুদের সঙ্গে নিয়ে’। এবার তিনি সংসদে যাবেন, কিন্তু যার হাত ধরে বঙ্গ বিজেপির উত্থান, সেই দিলীপ ঘোষ যাবেন না। সেই নিয়েই সাক্ষাৎকার শেষ করতে করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলছিলেন, ‘দিলীপদাকে সরানো উচিত হয়নি। আমি বেশি কিছু এই নিয়ে বলব না, কিন্তু এই সিদ্ধান্তটা ঠিক নয়। প্রচুর কাজ করেছেন উনি ওনার এলাকাতে, তাই ওনাকে সরানো উচিত হয়নি’।