'কার্নিভাল বাংলার গর্ব। ওই দিন উত্তরবঙ্গে এসে কী করতাম?' উত্তরকন্যা থেকে শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিরোধীদের ‘রাজনীতি’র পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে বন্যা যেদিন বড় আকার ধারণ করে সেদিনই রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে অংশ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এত মানুষের মৃত্যুর পরও কেন কার্নিভাল চালানো হল? প্রশ্ন তোলে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধীরা। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের জবাব দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-১৫ স্ত্রী, ৩০ সন্তান, ১০০ ভৃত্য! বিশাল সফরসঙ্গী নিয়ে আবুধাবিতে রাজা, বন্ধ হল বিমানবন্দর
দু’দিন উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'কার্নিভাল নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। কার্নিভাল বাংলার গর্ব। এতগুলো ক্লাব আশা করেছিল ওদের কোনও মূল্য নেই? ওই দিন সমস্ত অ্যারেজমেন্ট করা হয়ে গিয়েছিল। ইউনিসেফ থেকে অনেক বিদেশিরা ছিলেন। বাতিল করা সম্ভব?' তিনি আরও বলেন, 'সেদিন যদি আমরা আসতাম এসে কী করতাম? ভিআইপিকে দেখতে গিয়ে উদ্ধারকার্য ব্যাহত হত না? পুলিশ, প্রশাসন কাকে সামলাত? ওই সময় প্রধান কাজ কোনটা?' গত শনিবার ভারী বৃষ্টি এবং ধসে বিপর্যস্ত হয় উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা।শনিবার রাত থেকেই তিনি এবং তাঁর টিম প্রতিমুহূর্তে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'রবিবার ভোর পাঁচটায় আমি প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং করি। ততক্ষণে স্থানীয় প্রশাসন স্পটে। অর্থাৎ উদ্ধারকাজে কোনও খামতি ছিল না। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা শুরু করা হয়েছিল।' মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন, প্রচুর বৃষ্টির জন্য পাহাড়ে রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। নতুন করে আবার পিডব্লিউডি রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছে। এবার যদি ঘনঘন গাড়ি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন তাহলে রাস্তা তো বটেই পাহাড়ের উপর চাপ তৈরি হয়।
তাঁর কথায়, 'ভিআইপির নাম করে ৩০টা গাড়ি ৪০ টা গাড়ি নিয়ে ঢুকছে। আমি তিনটে গাড়ি নিয়ে যাই…একটা সামনে থাকে, আমি মাঝে থাকি আর একটা পিছনে থাকে। একে রাস্তা খারাপ। তারপর যদি ৪০ টা গাড়ি নিয়ে ঢুকি তাহলে কি পাহাড়ে প্রেশার পড়ে না? আমি তাই স্ট্রিকলি বলেছি, আমাদের কেউ গেলে ৩টের বেশি গাড়ি নিয়ে যাবে না।' গোটা উত্তরবঙ্গের বিস্তির্ণ এলাকা এই মুহূর্তে বলতে গেলে ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। জায়গায় জায়গায় সেতু থেকে রাস্তা, বন্যা থেকে তৈরি হওয়া ধসের জন্য সবই হতচ্ছিন্ন চেহারা নিয়েছে। এই বিপর্যয় নিয়ে যে রাজ্য আগে থেকেই উত্তরবঙ্গবাসীকে সতর্ক করেছিল সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৪ অক্টোবর সতর্ক করেছিল প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়ে ইতিমধ্যেই যে রাজ্য সরকারের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়টি উল্লেখ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্যায় যাদের চাষের জমি ডুবে গিয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং যাদের গবাদিপশু মারা গিয়েছে তাদেরও সহযোগিতা করবে রাজ্য প্রাণীসম্পদ দফতর। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই রোহিনীর ধস সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। নাগরাকাটায় ব্রিজের কাজ পিডব্লুডি শুরু করে দিয়েছে। সব রাস্তা বা সব ব্রিজ তো একসঙ্গে করা সম্ভব নয়।