সুপ্রিম নির্দেশ মানলেন কারা? কারাই বা সেই নির্দেশ অমান্য করে অনড় রয়েছেন কর্মবিরতিতে? সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে প্রাপ্ত সেই রিপোর্ট এবার স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চাইল নবান্ন। শুক্রবার আয়োজিত একটি জরুরি বৈঠকে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কথা হয়েছে এই বিষয়টি নিয়েও।
উল্লেখ্য, আরজি করে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও মৃত্যুর পর থেকেই লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েক হাজার জুনিয়র চিকিৎসক। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, রাজ্য সরকার যদি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান করতে পারে, তাহলে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে হবে।
এক্ষেত্রে আন্দোলনকারীরা সুপ্রিম নির্দেশ অমান্য করলে রাজ্য সরকার ওই জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে। যদিও এরপরও আন্দোলনকারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি। তবে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফেও তাঁদের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়নি।
সূত্রের খবর, কঠোর পদক্ষেপ না করা হলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কোন কোন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই খোঁজখবর নেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। নবান্নের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সেই সংক্রান্ত রিপোর্টও চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
এরই পাশাপাশি, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার তড়িঘড়ি একটি ভার্চুয়াল বৈঠক সারেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজগুলির অধ্যক্ষ, সংশ্লিষ্ট সমস্ত জেলার জেলাশাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। শুক্রবারের ওই বৈঠকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আলোচনা চলে।
রাজ্যের কোন কোন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরিষেবা পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত কী কী সমস্যা রয়েছে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন মুখ্যসচিব। প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজকে কার্যত সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে মুড়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। যেসব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ইতিমধ্যেই ক্যামেরার জন্য বরাদ্দ অর্থ পেয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যেই তাদের সিসিটিভি লাগানোর কাজ শেষ করতে হবে বলে নবান্নের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়।
যারা এখনও সিসিটিভির জন্য বরাদ্দ অর্থ পায়নি, সেইসব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বরাদ্দ অর্থ পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে, দ্রুত শেষ করতে হবে পড়ুয়া ও চিকিৎসকদের জন্য নির্ধারিত রেস্ট রুম তৈরির কাজও।
এছাড়া, নতুন করে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের বিষয়টিকেও বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে নবান্ন। বৈঠকে মুখ্যসচিবের কড়া নির্দেশ, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শীঘ্রই একটি গাইড লাইন প্রকাশ করবে রাজ্য সরকার। নিয়োগ প্রক্রিয়া সারতে হবে সেই গাইড লাইন মেনেই। এক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।