বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতির জন্যই যে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তিনি ছিলেন না, তা বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয়। তবে আগের সপ্তাহে যখন প্রধানমন্ত্রী তাউটের পর প্রশাসনিক বৈঠক করতে গুজরাতে গিয়েছিলেন, তখন কেন কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হল না? যাঁদের সেই বৈঠকে থাকার কথা ছিল না, তাঁরা কেন সেখানে ছিলেন?'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'প্রথমে বলা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বৈঠক হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য সফরসূচি কাটছাঁট করি। আমাকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। আর সবসময় যে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে মুখ্যমন্ত্রীকে যেতে হবে এমন কোনও কথা নেই। ভুল খবর ছড়িয়ে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে সেখান থেকে আমার মুখ্যসচিবের সঙ্গে দিঘা যাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে পা ছুঁতে বললে বাংলার জন্য তাই করব।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আগে ঘোষণা করি যে ইয়াস দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাব। সেই ঘোষণার পরের দিন প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘোষণা হয়। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে হার হয়েছে বলেই কি প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে? সেই কারণেই কি মুখ্যসচিবের বদলি? মুখ্যসচিবের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়েছিল। তার পরও কেন মুখ্যসচিবকে বদলি করা হল?’
গত বুধবার ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সেই ঝাপটায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাও। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও পর্যালোচনা বৈঠকের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই একই বৈঠকে ডাকা হয় রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। শুক্রবার কলাইকুণ্ডায় আয়োজিত এই বৈঠকে বাকিরা যোগ দিলেও অনুপস্থিত ছিলেন মমতা।
পরে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব।