২০২৪-এ বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে ২৬ বিরোধীদল মিলে তৈরি করেছে ‘ইন্ডিয়া’। জোটের শর্ত মেনে একুশে জুলাইয়ের সভা থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এ শব্দও উচ্চারণ করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে থামছেন না অধীর, শনিবার এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ফের সরব হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর দাবি, তিনি এনেক আগেই জানিয়েছিলেন মমতাকে কংগ্রেসের হাত ধরতে হবেই।
শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, ‘২০১১ সালে রাজ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতা এসেছিলেন কংগ্রেস ঘাড়ে ভর করে। তাঁর প্রতি রাজ্যবাসীর মোহমুক্তি ঘটেছে। এবার তাঁর মনে হয়েছে কংগ্রেসের হাত ধরতে হবে।’
(পড়তে পারেন। বিজেপির প্ল্যান–বি ঠিক কী? শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে ফাঁস করলেন মমতা)
২৬ দলের নতুন জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। জোট গঠন হওয়ার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হচ্ছিল এই নাম মমতারই মতিষ্কপ্রসূত। তা মানতে নারাজ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ভারত জোড়ো কর্মসূচি গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে সারা দেশের পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট। তাই ভাবনার সঙ্গে যোগ না দিলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, তা বুঝতে পেরে বিরোধী জোটে যোগ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।’ তাঁর মতে, কংগ্রেসের যতটা তৃণমূলকে দরকার তার চেয়ে বেশি তৃণমূলের কংগ্রসেকে দরকার।
প্রসঙ্গত একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা চেয়ারের কেয়ারের করি না। আমাদের কোন চেয়ারের দরকার নেই। আমরা চাই বিজেপি দেশ থেকে রাজনৈতিক ভাবে বিদায় নিক। বিজেপিকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। ’ তিনি আরও বলেন, ‘ইন্ডিয়া লড়বে। তৃণমূল কংগ্রেস পাশে ঝান্ডা নিয়ে সৈনিকের মতো দাঁড়িয়ে থাকবে।’
বিরোধী জোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময় থেকে অধীর চৌধুরী বলে আসছেন, কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দল জোট করলেও রাজ্যে ঘাসফুল সরকারের বিরুদ্ধেই লড়াই জারি রাখবে। তাঁর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ভোট প্রচারের সময় বলেন, কেন্দ্র জোট হলে রাজ্যে কংগ্রেস সহযোগিতা চাইবে তা হবে না। তবে অনুষ্ঠানিক ভাবে জোট গঠনের প্রাক পর্বের কথা। জোটের নাম ঘোষণার পর একুশে জুলাই হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম জনসভা। সেখানে তিনি পঞ্চায়েতে মৃত্যু প্রসঙ্গে বাম জমানার উল্লেখ করলেও কংগ্রেসকে নিয়ে একটি কথাও বলেননি। তবে অধীর চৌধুরী যে তাঁর অবস্থান এখনও বদলাননি তা শনিবার স্পষ্ট করলেন।
একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে বাংলার নিজস্ব একশ দিনের প্রকল্প চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন। যার নাম দিয়েছেন ‘খেলা হবে’। এ প্রসঙ্গে অধীরের প্রশ্ন রাজনৈতিক একটি স্লোগানের সঙ্গে কেন সরকারি প্রকল্পকে যুক্ত করা হচ্ছে। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, ‘২০২৪ সালের ভোট আসছে বলে কী আবার মানুষকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা নয় তো?’ তাঁর কথায়, এই প্রকল্প আসলে সরকারি টাকায় ভোটের প্রচার।