সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন একদা রবীন হুড অধীররঞ্জন চৌধুরী। বাংলায় বামেদের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেসের সার্বিকভাবে খারাপ ফল হয়েছে। এই পরাজয়ের পর কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ। তাই নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে দেখা করতে। এখনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তিনিই রয়েছেন। তাঁকে সরানো হয়নি। এমনকী অধীর চৌধুরীর উপরে এখনই আস্থা হারাচ্ছে না কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। যিনি নয়াদিল্লির বাংলো ছাড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁকেই তা করতে নিষেধ করল কংগ্রেস হাইকমান্ড।
পাঁচবারের জয়ী সাংসদ হেরে যাওয়ার পর গত ৮ জুন নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়। কারণ তিনি কংগ্রেসের কর্মসমিতির সদস্য। সূত্রের খবর, নয়াদিল্লির ওই বৈঠকে গিয়ে অধীর প্রদেশ সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব অধীরকে সেটা না করতে বলেন। ইস্তফার কথা ভাবার দরকার নেই বলে তাঁকে জানানো হয়। ইতিমধ্যেই যেসব রাজ্যে কংগ্রেস হেরেছে সেসব রাজ্যে হারের কারণ চিহ্নিত করতে পৃথক কমিটি গড়তে চলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাই এখনই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ ছাড়তে অধীরকে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকী নয়াদিল্লির বাংলো না ছাড়ার কথাও বলা হয়েছে। এমনই নির্দেশ এসেছে অধীরের দুয়ারে।
আরও পড়ুন: মালদা বসিরহাটের পর শুটআউট বেলঘরিয়ায়, ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে চলল মুহূর্মুহ গুলি
বিধান ভবন সূত্রে খবর, আগামী ২১ জুন মৌলালি যুব কেন্দ্রে বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠক হবে বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির প্রসঙ্গে। সেখানে থাকবেন কংগ্রেসের প্রার্থীরা। অধীর চৌধুরীও উপস্থিত থাকবেন। তারপর রিপোর্ট যাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সুতরাং এখনই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই। তার মধ্যে অধীরকে নয়াদিল্লির রাজনীতিতে কাজে লাগাতে চাইছে এআইসিসি। ৯ জুন কংগ্রেস কর্মসমিতির বৈঠকের পরই অধীরকে দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আপনি দিল্লির বাংলো ছাড়বেন না।’ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই বাংলো না ছাড়ার নির্দেশে নয়া গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
কেন এমন নির্দেশ দেওয়া হল? অধীর লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে বলেছিলেন, তৃণমূল যদি তাঁকে এই কেন্দ্রে হারাতে পারে তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি। মাঠে গিয়ে বাদাম বেচবেন। সেখানে এখন তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, রাজনীতি ছাড়া কিছুই তিনি শেখেননি। কোনও কারবারও নেই। আর তাই গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তবে কি অন্য কোনও রাজ্য থেকে জিতিয়ে রাজ্যসভায় নিয়ে যেতে চাইছে কংগ্রেস? কোনও কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হবে অধীরকে? কারণ সামনেই রাজ্যসভার ১০ আসনে নির্বাচন। তার মধ্যে জোটসঙ্গীদের সাহায্য পেলে ২–৩টি আসন জিততে পারে কংগ্রেস। সেই আসনে অধীরকে ভাবা হচ্ছে বলেই গুঞ্জন ছড়িয়েছে। আবার রাহুল গান্ধী যদি কেরলের ওয়াইনাড় থেকে পদত্যাগ করেন তাহলে সেই আসনের উপনির্বাচনে হবে। সেখানে প্রার্থী করা হতে পারে অধীরকে বলে তুঙ্গে জল্পনা।