আজই ছিল দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের শেষ কর্মদিবস। বিদায়ী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে একাধিক মামলা অমীমাংসিত রয়েছে, যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বাংলার। আরজি কর কাণ্ডের মামলাই শুধু নয়, রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগের মামলা সহ বহু মামলার নিষ্পতি হয়নি, যা চলছিল তাঁর বেঞ্চে।
বিদায়ী ভাষণ:-
শুক্রবার তাঁর বিদায় সংবর্ধনা আয়োজিত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। যদিও খাতায় কলমে তাঁর অবসরের দিন ১০ নভেম্বর, তবে দিনটি রবিবার হওয়ায় শুক্রবারই এই সংবর্ধনা আয়োজিত হয়। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি যদি আদালতে কখনও কাউকে আঘাত করে থাকি তবে আমি চাই আপনি দয়া করে আমাকে ক্ষমা করুন।’
এদিকে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে থাকা যে সমস্ত মামলা অমীমাংসিত থেকে গেল, তার মধ্যে বাংলার তাবড় ৫ মামলা রয়েছে। সেগুলি কী কী দেখা যাক:-
আরজি কর কাণ্ড:-
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অন্দরে তরুণী চিকিৎসকের খুন ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। অভিযোগ রয়েছে ধর্ষণের। তদন্তে নেমেছে সিবিআই। মামলায় আগে, তদন্তে নেমে সঞ্জয় রায়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখনও এই খুন ও ধর্ষণের মামলায় সেই ধৃত। এছাড়াও দুর্নীতিতে নাম ওঠে কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। তিনিও বন্দি। এই মামলা প্রথম সুপ্রিম কোর্টে যায় ১৮ অগস্ট। প্রথম শুনানি হয় ১০ ডিসেম্বর। মামলায় একাধিক বার্তা দিয়েছে কোর্ট। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ ডিসেম্বর। তখন সিজেআই থাকবেন না ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলা:-
এসসসি দুর্নীতি কাণ্ডে একটা সময় উত্তাল হয় বাংলা। দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের। সেই মামলা যায় দেশের শীর্ষ আদালতে। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এদিকে, এর আগে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে। এদিকে, আলাদা করে মামলা করে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই মামলার শুনানি আগামী ১৯ নভেম্বর।
ওবিসি সার্টিফিকেট মামলা:-
এই মামলাতেও ছিল দুর্নীতির অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গের ১২ লক্ষের বেশি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে মামলার প্রথম শুনানি হয় ১৮ জুন। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১৩ ডিসেম্বর। যখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে থাকবেন না ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলা
এই মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যে সংঘাত খবরের শিরোনাম কাড়ে। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নিয়ে দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে তা খারিজ করেন সৌমেন সেন। বেনজির এই সংঘাতের আবহে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলায় শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ছুটির দিনে মামলা শোনেন প্রধান বিচারপতির পদে থাকা চন্দ্রচূড়। সেদিনটি ঠিল ১৭ জানুয়ারি। আর মামলায় শেষবার শুনানি হয়েছে ২৯ জানুয়ারি। পরবর্তী শুনানি ১৮ নভেম্বর।
রাজভবনে শ্লীলতাহানি মামলা
রাজভবনে অন্দরে মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল বাংলা। হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়। রাজ্যপাল পদাধিকার অনুযায়ী সাংবিধানিক রক্ষাকবচ পেয়ে থাকেন বলে পদক্ষেপ করতে পারেনি পুলিশ। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে গত ১৯ জুলাই এক বারই এই মামলার শুনানি হয়। এরপর এই মামলার শুনানির জন্য ওঠেনি।