স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত 'জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর হামলার ষড়যন্ত্র' সংক্রান্ত ভাইরাল অডিয়ো কাণ্ডে বাম যুব নেতা কলতান দাশগুপ্ত গ্রেফতার হতেই কোমর বেঁধে আসরে নেমে গেল তৃণমূল কংগ্রেস। বামেদের উপর আক্রমণ শানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সরব হলেন দলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
শুক্রবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ যে অডিয়ো ক্লিপ সর্বসমক্ষে আনেন, তাতে দুই ব্যক্তির ফোনালাপ আছে বলে দাবি করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন নাকি 'ক' এবং অন্যজন 'স'! পুলিশের দাবি, এই 'ক' ব্যক্তিটিই হলেন কলতান দাশগুপ্ত। শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ একেবারে ফিল্মি কায়দায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করে দেখেছে। সেটি যে ভুয়ো নয়, সেই বিষয়ে তারা নিশ্চিত।
এই পুরো ঘটনাক্রমের প্রেক্ষিতে এক্স হ্যান্ডেলে বাম নেতা-কর্মীদের আক্রমণ করেছেন দেবাংশু। তাঁর বক্তব্য, বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে আমজনতাকে ক্ষেপিয়ে তুলতেই জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে হাতিয়ার করছে প্রায় ১৩ বছর আগে ক্ষমতা হারানো বামফ্রন্ট। রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করতেই আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে, সেই হামলার দায় প্রশাসনের উপর চাপানোর ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
এই ঘটনায় কলতান দাশগুপ্তের জড়িত থাকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দেবাংশু। ধিক্কার জানিয়েছেন 'বামেদের এই ষড়যন্ত্র'কে। একইসঙ্গে, সংশ্লিষ্ট ভাইরাল অডিয়োয় 'সাহেব' বলে যাঁকে সম্বোধন করা হয়েছে, তাঁর পরিচয় নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের যুব নেতা। তাঁর আশঙ্কা, ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়, কিংবা সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম - যে কেউ এই 'সাহেব' হতে পারেন।
একইসঙ্গে, পুলিশের কাছে এই ষড়যন্ত্রের 'মাথা'কে চিহ্নিত করে পাকড়াও করার আর্জিও রেখেছেন দেবাংশু। তাঁর আরও দাবি, ১৪-১৫ অগস্টের রাতে মেয়েদের প্রথম রাত দখলের কর্মসূচি চলাকালীন আরজি কর হাসপাতালে যে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছিল, তার নেপথ্যেও বামেদেরই হাত রয়েছে!
অন্যদিকে, গ্রেফতারির পর এই ঘটনায় পাল্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হয়েছে বামেদের পক্ষ থেকেও। তাদের বক্তব্য, আন্দোলনের ব্যাপ্তি দেখে ভয় পেয়েছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই মূল বিষয় থেকে সকলের নজর ঘোরাতে তথাকথিত ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে।
যদিও পুলিশের দাবি, এই ঘটনায় কলতানের আগেই সঞ্জীব দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নাকি ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন, তিনিই ওই ভাইরাল অডিয়োর সেই 'স'!