হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইনের কামারকুন্ডু স্টেশন উত্তাল হকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ৫০ বছর বয়সের রাকেশ ঘোষাল গতকাল আরপিএফের সঙ্গে বসার সময় ট্রেন থেকে পড়ে যান বলে হকারদের সূত্রের খবর। বছর পঞ্চাশের এই হকারের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরের ব্যানার্জি পাড়ায়। তিনি গতকাল জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেস হকারি করতে উঠলে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এমন ঘটনা ঘটে। আরপিএফ তাকে নেমে যেতে বললে বচসা বাঁধে রাকেশবাবুর সঙ্গে। এরপর আরপিএফের সঙ্গে ধাকাধাক্কির সময়ে ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের ফাঁক দিয়ে পড়ে যায় এই হকার। এরপর এই হকারকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এমন ঘটনা বুঝতে পেরে ট্রেনের ড্রাইভার ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে দিলেও হকারের মৃত্যু আটকানো যায়নি। দেহ উদ্ধার করে সিঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে গেলেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
এই দুর্ঘটনার পর তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় স্টেশন জুড়ে। হকাররা সংগঠিত ভাবে আরপিএফ-এর বিরুদ্ধে জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করে বলে সূত্রের খবর। তবে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরপিএফ। আরপিএফ সূত্রে দাবি, এসি কামরায় হকারি করা যায়না! সে কারণেই ওই ব্যক্তিকে নেমে যেতে বলা হয়েছিল। এরপর কামারকুন্ডু স্টেশনে ট্রেনটি কিছুক্ষণ দাঁড়ালে তিনি তাড়াহুড়ো করে নামার সময় ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই তিনি পড়ে যান।
এই দিন দক্ষিণেশ্বর থেকে জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস এর হকারি করতে ওঠেন রাকেশ বাবু, এরপর দুপুর ১২:৩০ টা নাগাদই কামারকুন্ডু স্টেশনে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে তার সঙ্গে। এরপর হকাররা স্টেশন চত্বরে জড়ো হয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অভিযোগ, চলন্ত ট্রেন থেকে তাকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হাওড়া রেল পুলিশের সুপার পঙ্কজ দ্বিবেদী বলেন, ‘কামরা বদল করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে, যদি কেউ অভিযোগ আনে, তাহলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে পূর্ব রেলের আরপিএফ আইজি পরমশিব জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ একেবারেই মিথ্যে। হকার পড়ে গিয়েছেন অসংরক্ষিত কামরা থেকে, ওই কামরায় আরপিএফ থাকে না।’ এই ঘটনায় আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আরপিএফ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলিও প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনে হকারির অধিকার নিয়ে সরব হয়েছেন।