ভোটের আগেই চিত্রটা ছিল অন্যরকম। দলে থেকে কাজ করতে না পেরে, তাঁরা দলে দলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। মত বদলে গেল ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই। বিজেপি ভরাডুবি হতেই এখন উল্টো সুর গাইছেন দলবদলুরা। এখন বিজেপিতে বেসুরোদের ভিড় বাড়ছে।
দলে ফিরতে চেয়ে অনুনয় বিনয় কিছুই বাদ রাখছেন না তাঁরা। কেউ প্রকাশ্যে তো কেউ তলে তলে যোগ বজায় রাখছেন ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে এবার উল্টো সুর শোনা গেল পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সাংসদ সুনীল মণ্ডলের গলায়।
মঙ্গলবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আচরণ নিয়ে অসন্তষ্টি প্রকাশ করেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, ‘ বিজেপির তৃণমূল থেকে আসা দলত্যাগী নেতাদের প্রতি আস্থার বিষয় সমস্যা আছে। শুভেন্দু অধিকারীও তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। আমি আপনাদের সবাইকে আমার পরের পদক্ষেপের বিষয় জানাব।’
সুনীল মন্ডল বিস্ফোরক মন্তব্য করে জানান, শুভেন্দু অধিকারী ও তিনি মিলে একসাথে নেতৃত্ব দিয়ে বিজেপি করবেন বলে আশ্বাস পেয়েছিলেন শুভেন্দুর কাছ থেকে। কিন্তু হিসাব মত শুভেন্দু তার কথা রাখে নি। তাছাড়া তিনি বাম আমলে যে ঘরানায় সংগঠনটা করে এসেছিলেন তার থেকে অনেক নীতিগত ফারাক রয়েছে বিজেপিতে।
এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ পচা শামুকেও পা কাটে। ভোটের সময় যে দোভাষিরা এখানে এসেছিলেন, তাঁরা বাংলার মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁদের তো রাজনৈতিক জ্ঞানই ছিল না!’
সুনীল আরও বলেন, ‘তাঁদের কি বাংলার বোধ আছে? আমি ৭ বছর ধরে সাংসদ রয়েছি, তবুও হিন্দি বুঝতে পারি না। তাহলে আমার গ্রামের মানুষেরা হিন্দি কীভাবে বুঝবেন?তাহলে ভোটের সময় এই প্রসঙ্গে কেন মুখ খুললেন না? এই প্রশ্নে সুনীলবাবুর সাফাই, ‘ কিছু বলার মতো আমার পদ ছিল না, তাই বলতে পারিনি।’
অবশ্য এর আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলবদলুদের কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘দল ছাড়াটা এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সেই লোকদের উপর নির্ভর করে, যারা রক্ত দিয়ে ঘাম ঝরিয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছে। বিজেপিতে থাকতে হলে ত্যাগ তপস্যা করতে হবে। যারা শুধু ক্ষমতা ভোগ করতে চান, তারা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। আমরাই রাখব না।’