'দাদার অনুগামী' ব্যানারের তলায় কর্মসূচি চলেছে প্রায় একমাস। তখন তাঁর মুখে বারবার উঠে এসেছিল মেদিনীপুরের প্রসঙ্গ। কিন্তু দলবদলের প্রথমদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর পাশে দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের মাত্র এক তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক বনশ্রী মাইতিকে। পূর্ব মেদিনীপুরের বাকি যে দুই বিধায়ক দলবদল করেছেন, তাঁরা হলেন সিপিআই নেতা অশোক দিন্দা এবং বাম নেত্রী তাপসী মণ্ডল। আর এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর কৃতিত্বের কৃতিত্ব রয়েছে শ্যামল মাইতির। তাহলে মেদিনীপুর জুড়ে যোগ দেওয়ার যে আওয়াজ তিনি তুলেছিলেন তা কী হল? উঠছে প্রশ্ন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কলেজিয়েট স্কুলের ময়দানে বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সভা মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় শুভেন্দু আগের মতোই ফের উসকে দিয়েছেন মেদিনীপুরের আবেগ। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে অবিভক্ত মেদিনীপুরের স্বাধীনতা আন্দোলন, তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার, শহিদ ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা, বিদ্যাসাগরের কথা। কিন্তু মেদিনীপুরের সেই মাটির সমর্থন তিনি পেলেন কী? উঠছে প্রশ্ন।
কিন্তু শুভেন্দু যে অবিভক্ত মেদিনীপুরে গৌরবের কথা বারবার বলছেন, সেই মেদিনীপুরের মধ্যে কেবল পূর্বের এক সদ্য দলত্যাগী তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রীর মতো জেলা নেতৃত্ব ছাড়া তেমন আর কেউ তাঁর পাশে ছিলেন না। ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের কোনও বিধায়ক বা ব্লক সভাপতি এদিন ওই দলবদলের সভায় ছিলেন না। তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপিতে যোগদান দেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক বিধায়ক এবং নেতার নাম শোনা গিয়েছিল। অবশ্য শনিবারের সভায় দলবদল ঘিরে তাঁরা প্রকাশ্যে কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করেননি। শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুরের তাঁর অন্য কোনও অনুগামীকে দেখা গেল না কেন?
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘সবাই যাবে এটা আশা করা অন্যায়। কারণ তিনি বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁর স্বার্থে। তাতে আমাদের কী লাভ হল? আমাদের তো সেই খেটেই খেতে হবে। কী সুবিধা পাওয়া যাবে, তাই আগে জানানো হোক। তারপর বিজেপিতে যাব। তৃণমূলে তো ভালোই আছি। কেউ বিরক্ত করার নেই।’ তৃণমূলের জেলা কো–অর্ডিনেটর অখিল গিরি বলেন, ‘শুভেন্দু ছাড়া দলের একজন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বাকি বিধায়ক ও অধিকাংশ নেতৃত্ব তৃণমূলেই রয়েছেন।’