তিনি 'দাদার অনুগামী' হিসাবে পরিচিত। দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি। তাই দল থেকে রবিবার বহিষ্কার করা হল কনিষ্ক পণ্ডাকে। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘দলবিরোধীদের এখনই বের করে দেওয়া হোক।’ রবিবার দলবিরোধী কাজের অভিযোগে কণিষ্ককে বহিষ্কার করল তৃণমূল। জেলা নেতৃত্বকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। কিন্তু এখন প্রশ্ন, এরপর কী? কোথায় যাবেন কনিষ্ক?
সূত্রের খবর, কনিষ্ক এখন কোথাও যাবেন না। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর অফিস সামলাবেন। তবে একে একে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠদের অপসারণের পথ ধরেছে রাজ্যের শাসকদল। তার আগে জেলায় একাধিক ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। এবার সরানো হল জেলা সম্পাদক কণিষ্ককে। এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে শুভেন্দুকেও বার্তা পরোক্ষে দেওয়া হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। মেদিনীপুরে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অখিল গিরিকে সমর্থন করেও শুভেন্দুকে বার্তা দিয়েছিলেন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দিলেন।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের অন্দরমহলে কণিষ্ক পণ্ডা শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। মুখ খুলে সরাসরি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলেছিলেন কণিষ্ক পণ্ডা। শুভেন্দু অধিকারীকে খুনের চক্রান্ত হচ্ছে বলেও গুরুতর অভিযোগ করেন কণিষ্ক পণ্ডা। শনিবার তিনি বলেন, ‘দিদির স্বাস্থ্যসাথী ঢপ। যখন হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, তখন তাড়িয়ে দেবে। দিদির কাছে কোনও টাকা নেই। দিদির যা ঋণ আছে, তা ঢেকে দিলেও ঋণশোধ হবে না।’
এই বিষয়ে টেলিফোনে কনিষ্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা আনন্দময় অধিকারীকে। তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘দলবিরোধী মন্তব্য করলে দলই সিদ্ধান্ত নেবে। আর তা নিয়েছে। এখানে আমার কী বলার থাকতে পারে। দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ না খোলাই ভাল। যদি দলের সঙ্গে কোনও সমস্যা তৈরি হয় তা দলের অন্দরে আলোচনা করতে হবে। সেখানেই সমস্যা মিটিয়ে নিতে হবে। বিরোধী দলের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার কোনও মানে হয় না।’ অর্থাৎ বিরোধী দল বিজেপিতে কণিষ্ক যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
দল থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করার তিনি বলেন, ‘দলবিরোধী কোনও কাজ আমি করিনি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলাম মাত্র। আমি মুক্ত হলাম। এই ধরনের সিদ্ধান্তের পরোয়া করি না। তৃণমূল কিছুদিন পর পোস্টারে পরিণত হবে। দিদিকে যতদিন না আমরা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার থেকে সরাতে পারছি, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। রাজনীতির ময়দানে দেখা হবে। এখন শুভেন্দুর ভবিষ্যৎ নিয়ে না ভেবে এখন মুখ্যমন্ত্রী নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবুন। আমি তৃণমূল কোনওদিনই করতাম না। আমি করতাম শুভেন্দু অধিকারীর দল। তাই শুভেন্দু যেখানে আমি সেখানে।’ এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে কণিষ্ক সাফ বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী যেখানে যাবেন তিনি সেখানে যাবেন। বিজেপিতে গেলে তিনিও বিজেপিতে। এখন দেখার এই পর্বের শেষ কোথায়।