বাংলায় ফের হাতি মৃত্যু। আপালচাঁদ রেঞ্জের জঙ্গলে পূর্ণবয়স্ক একটি হাতিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। দেহে ক্ষত থাকার কারণে গত একমাস ধরে অসুস্থ ছিল হাতিটি। কিন্তু, সেই অবস্থার মধ্যেও ঠিকমতো চিকিৎসক করা করা হয়নি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবে হাতির মৃত্যুর ঘটনায় বনদফতরের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন পশুপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: ১০ সঙ্গীর রহস্য মৃত্যুর ‘বদলা’ নিল হাতি,পা দিয়ে পিষে দিল দুই ব্যক্তিকে
জানা যাচ্ছে, বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের আপালচাঁদ রেঞ্জের হাতিটি গত নভেম্বর থেকে অসুস্থ ছিল। প্রথম হাতিটির অসুস্থতা নজরে আসে গত ২৪ নভেম্বর। ক্রান্তি ব্লকের আপালচাঁদ রেঞ্জের বনাঞ্চলের কাছে নদীর মাঝে ওই হাতিকে গ্রামবাসীরা শুয়ে থাকতে দেখেন। তখন গ্রামবাসীরা লক্ষ করেন হাতির শরীরে পিছনের দিকে একাধিক ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। সে বিষয়টি দেখতে পেয়ে বনদফতরে খবর দেন স্থানীয়রা।প্রাথমিকভাবে বনবিভাগের অনুমান ছিল, অন্য কোনও হাতির সঙ্গে লড়াইয়ের জেরে এই ক্ষত তৈরি হয়েছিল। এরপর বনবিভাগ হাতিটির প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেছিল।প্রাথমিকভাবে হাতির ওরাল ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েছিল। তবে হাতিটিকে ভালোভাবে চিকিৎসা করা হয়নি বলেই অভিযোগ। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে হাতিটির ক্ষত জায়গায় ভালোভাবে চিকিৎসা করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। প্রায় একমাস ধরে এরকম চলতে থাকার পর রবিবার সকালে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানান বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের ডিএফও রাজ এম। তিনি জানান, দেহে ক্ষত থাকার কারণেই হাতির মৃত্যু হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ক্ষতের কারণে হাতিটি বেশিরভাগ সময়েই নদীতে শুয়ে থাকত অথবা ক্ষতস্থানে মাটি দিয়ে থাকত। কিন্তু, তাতে লাভ হল না। শেষ পর্যন্ত হাতিটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই অবস্থার মধ্যেও গত শনিবার বনকর্মীরা হাতিটিকে আপালচাঁদ রেঞ্জের টুকরো জঙ্গল থেকে ক্রান্তি–শিলিগুড়িগামী ক্যানেল রাস্তা পার করিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যান বলে জানা গিয়েছে। তারফলে হাতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। আর তার পরের দিনই হাতির দেহ উদ্ধার হল। এবিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বন বিভাগের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পশুপ্রেমীরা। তাদের বক্তব্য এই মৃত্যুর জন্য বন বিভাগের চূড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। হাতেটি অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও একমাস ধরে কোনওরকমের চিকিৎসা করা হয়নি। কার্যত হাতিটিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।