মনসা পুজো দেখে গভীর রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় সামনে চলে আসে একটি বিশাল হাতি। অনেক চেষ্টা করেও পালাতে ব্যর্থ হন ওই ব্যক্তি। এরপরেই ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। ঝাড়গ্রামে আবারও হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। সোমবার গভীর রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার গাড়রা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃতের নাম শঙ্কর মাহাতো (৫৭)। মৃত ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: মালবাজারে স্কুলে হাতির তাণ্ডব, গজরাজের হানায় ১ বছরে ৫ বার ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়
বন দফতর এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে কয়েকটি হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অবস্থায় কোনও ব্যক্তি যাতে হাতির হানার মুখোমুখি না হন তার জন্য জঙ্গল লাগোয়া রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার সতর্কতা দিয়েছে বনদফতর। তবে সেই সতর্কতা না মেনে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যেতেই ঘটে বিপত্তি। স্থানীয় সূত্রের খবর, পার্শ্ববর্তী বটডাঙ্গায় মনসা পুজো চলছিল। তা দেখতে গিয়েছিলেন শঙ্কর। এরপর রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ জঙ্গল লাগোয়া রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন শঙ্কর। সেই সময় তার সামনে পড়ে যায় একটি বিশাল হাতি। তা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান শঙ্কর। হাতিটিও শঙ্করকে দেখে ফেলে। তখন প্রাণ বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু, পালাতে ব্যর্থ হন।
শুঁড়ে করে তুলে আছাড় মারে হাতিটি। এর ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ এবং বনকর্মীরা সেখানে পৌঁছে শঙ্করের দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে মৃতের পরিবারে। পাশাপাশি হাতির হানায় মৃতের পরিবারকে নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। সেই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, বন বিভাগ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু জায়গায় হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরমধ্যে গিধনি রেঞ্জের আমতলিয়া বিটের বাঘাখন্দর-আমতলিয়া সংলগ্ন জঙ্গলে ১০ থেকে ১২টি হাতি বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘোরাফেরা করছে। মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্রামের বৃন্দাবনপুর এলাকাতেও দাঁপিয়ে বেড়ায় ১৭ টি দাঁতাল হাতির একটি দল।
হাতির তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খাবারের সন্ধানে দাঁতালের দলটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ের চাষের জমিতে তাণ্ডব চালিয়ে একাধিক জমির ধান নষ্ট করে। পাশাপাশি হাতির দলটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ের রাস্তার উপর দাঁপিয়ে বেড়ায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হুলা পার্টির সদস্যরা। শেষমেষ হুলা পার্টির সদস্যরা দাঁতালের দলটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়।